ইসরায়েলে হামলা চালিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হামাস। পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে পরিস্থিতি এখন চরম মাত্রায় পৌঁছেছে। এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন বিশ্বনেতারা। পক্ষে বিপক্ষে বলেছেন নানা কথা।
যুদ্ধে ইসরায়েলের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে একাধিক দেশ। তারা অবস্থান জানিয়ে দিয়েছেন বক্তব্যও। এসব দেশের মধ্যে রয়েছে ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্রসহ ভারতও।
জো বাইডেন
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, ইসরায়েলের এই খারাপ সময়ে আমি হামাসসহ বিশ্বকে মনে করিয়ে দিতে চায় যে কোনো পরিস্থিতিতে ইসরায়েলের পাশে থাকবে যুক্তরাষ্ট্র। সন্ত্রাসীদের প্রতিহত করতে ইসরায়েলের লড়াইয়ে সমর্থন জানাই।
অন্যদিকে এক বিবৃতিতে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন জানান, সামনের দিনগুলোতে ইসরায়েলের আত্মরক্ষা এবং নির্বিচার সহিংসতা ও সন্ত্রাসবাদ থেকে দেশটির বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষা করার জন্য যা প্রয়োজন তা নিশ্চিত করতে কাজ করবে মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর।
ইমানুয়েল ম্যাখোঁ
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ বলেন, ইসরায়েলের ওপর সস্ত্রাসীদের হামলার তীব্র নিন্দা জানায়। হাতহতদের পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা।
ভলোদিমির জেলেনস্কি
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমিরি জেলেনস্কি বলেন, ইসরায়েলের ভয়ংকর ‘সন্ত্রাসী হামলায়’ যারা আত্মীয়স্বজন বা নিকটজন হারিয়েছেন তাদের প্রত্যেকের প্রতি আমার সমবেদনা। আমাদের বিশ্বাস রয়েছে, শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা এবং ‘সন্ত্রাসীদের’ পরাজিত করা হবে। বিশ্বে সন্ত্রাসের কোনো জায়গা নেই। কারণ এটি সবসময়ই অপরাধ।
নরেন্দ্র মোদি
হামাসের এই হামলার পরই নিজের অফিসিয়াল এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্ট থেকে একটি টুইট করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। টুইটে হামাসের হামলার নিন্দা এবং এমন কঠিন মুহূর্তে ইসরায়েলের পাশে থাকার কথা জানিয়েছেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেছেন, ‘ইসরায়েলে সন্ত্রাসী হামলার খবরে বিস্মিত হয়েছি। নিরীহ নিহত মানুষ ও তাদের পরিবারের প্রতি আমরা সমবেদনা এবং সহমর্মিতা প্রকাশ করছি। এমন কঠিন মুহূর্তে আমরা ইসরায়েলের পক্ষে আছি।’
রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান বলেন, ইসরায়েলে যা হয়েছে তারপর আমি বলতে চাই আপনারা এমন কিছু করবেন না যাতে আর সংঘাত বাড়ে। এ দুপক্ষকেই সংযত হওয়ার আহ্বান জানাই।
আয়াতুল্লাহ খামিনি
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামিনি হামলার পরপরই কোনো রাখঢাক ছাড়াই ফিলিস্তিনিদের প্রতি আকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছেন। তিনি এটিকে বিজয়ী অভিযান উল্লেখ করে বলেন, এই বিজয়ী অভিযান নিশ্চিতভাবেই ইহুদি শাসনের অবসান ত্বরান্বিত করবে। এর মাধ্যমে তাদের আসন্ন ধ্বংস ডেকে আনবে।
খামিনির উপদেষ্টা রাহিম সাফাভি
একই বার্তা দিয়েছেন ইরানের শীর্ষ ধর্মীয় নেতা খামিনির উপদেষ্টা রাহিম সাফাভি। তিনি বলেন, আমরা ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের পাশে রয়েছি। যতক্ষণ পর্যন্ত না ফিলিস্তিন স্বাধীন হবে ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা পাশে থাকব।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
এদিকে বেইজিংয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংকটের কথা উঠে এসেছে। এ সময় চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অবিলম্বে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য দুপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান। তবে তিনি স্পষ্ট ভাষায় এও বলেছেন, দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধান অর্থাৎ ফিলিস্তিনিদের স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাই এ চলমান সংঘাত থেকে বেরিয়ে আসার উপায়।
চীনের এই বক্তব্যে হতবাক ইসরায়েল। তারা ভেবেছিল হামাসের হামলার কঠোর নিন্দা জানাবে চীনারা। বেইজিংয়ে ইসরায়েলি দূতাবাসের সিনিয়র কর্মকর্তা ইউভাল ওয়াকস বলেছেন, রাস্তায় মানুষকে জবাই করা হচ্ছে, এখন দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধানের ডাক দেওয়া সময় নয়।
মন্তব্য করুন