অধিকৃত পশ্চিম তীর ও গাজা উপত্যকা নিয়ে নতুন মানচিত্র প্রকাশ করেছে ইসরায়েল। দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে ভাষণ দেওয়ার সময় মানচিত্রটি উপস্থাপন করেন। খবর আলজাজিরার।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার জাতিসংঘে ভাষণ দেওয়ার সময় মধ্যপ্রাচ্যের দুটি মানচিত্র দেখান নেতানিয়াহু। প্রথমটি ইসরাইল রাষ্ট্র সৃষ্টির বছর ১৯৪৮ সালের। আর পরেরটিকে তিনি আখ্যা দেন নব্য মধ্যপ্রাচ্য নামে। সেখানে অধিকৃত পশ্চিম তীর ও গাজা উপত্যকাকে ইসরাইলের অংশ দাবি করা হয়। এর পরপরই এ নিয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানায় ফিলিস্তিনি।
নেতানিয়াহু জানান, সৌদি আরবের সঙ্গে তার দেশের শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হলে তা মধ্যপ্রাচ্যকে নতুন আকার দেবে। তবে এই আলোচনায় ফিলিস্তিনকে অন্তর্ভুক্ত করার সৌদি ও মার্কিন আহ্বানকে নাকচ করে দেয় ইসরায়েল। জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে অংশ নিয়ে নেতানিয়াহু জানান, আঞ্চলিক চুক্তিতে ফিলিস্তিনের অংশগ্রহণ কোনোভাবেই কাম্য নয়।
এর আগে ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে যুবরাজ বিন সালমান জানান, তার দেশ ক্রমেই ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার দিকে এগিয়ে চলছে। এমনকি বিষয়টি আলোচনার জন্য একটি বৈঠকেরও আয়োজন করে বাইডেন প্রশাসন। এ সময় ইরান নিয়েও সতর্ক করেন মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী এই নেতা।
একই সুরে সুর মিলিয়ে নেতানিয়াহু জানান, এই শান্তি চুক্তিতে বাধা দিতে চেষ্টা করবে ইরান। এ সময় ইরানকে মলমের ওপর উড়তে থাকা মাছি বলেও কটাক্ষ করেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী। জানান, রিয়াদ ও তেলআবিবের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ এরই মধ্যে বাস্তবায়নের পথে। তিন বছর আগেই ইসরায়েলি বিমানের জন্য সৌদি আরবের আকাশসীমা উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে দুই দেশের মধ্যে রেল ও জাহাজ যোগাযোগ স্থাপনের চেষ্টা চলছে।
২০২০ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডেনাল্ড ট্রাম্পের সময় মধ্যপ্রাচ্যের তিন দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন ও মরক্কোর সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করে ইসরায়েল। মার্কিন মদদে আব্রাহাম অ্যাকর্ডস নামক উদ্যোগের আওতায় এসব সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ করা হয়। নেতানিয়াহু বলেন, কোনো সন্দেহ নেই যে আব্রাহাম অ্যাকর্ডস শান্তির নতুন যুগের সূচনা করেছে। এ সময় ইসরায়েল এবং সৌদি আরবের মধ্যে ঐতিহাসিক শান্তিচুক্তি নাটকীয় অগ্রগতির দ্বারপ্রান্তে আছে বলেও জানান তিনি।
অন্যদিকে, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশ নিয়ে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস জানান, ফিলিস্তিনিদের পূর্ণাঙ্গ অধিকার আদায়ের আগে মধ্যপ্রাচ্যে কোনো ধরনের শান্তির সম্ভাবনা একেবারেই অবাস্তব। ইরান জানায়, এই ধরনের চুক্তি বাস্তবায়ন করা হলে তা হবে ফিলিস্তিনিদের পিঠে ছুড়ি মারার শামিল।
মন্তব্য করুন