পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদের অফিসিয়াল এক্স অ্যাকাউন্টে পোস্ট দিয়েছিল। সেই পোস্ট মুছে ফেলেছে তারা।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) এ তথ্য জানিয়েছে দ্য টাইমস অব ইসরায়েল। প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে। মন্ত্রণালয় এক্স অ্যাকাউন্টে লিখেছিল, ‘পোপ ফ্রান্সিস, শান্তিতে বিশ্রাম নিন। তার স্মৃতি আশীর্বাদ হোক।’
কিন্তু পোস্ট দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরে সেটি সরিয়ে নেওয়া হয় এবং বিশ্বজুড়ে কূটনৈতিক মিশনগুলোকে অনুরূপ পোস্টগুলো সরিয়ে ফেলার নির্দেশ জারি করে ইসরায়েল। শুধু তাই নয়, ভ্যাটিকান দূতাবাসে শোক বইতে স্বাক্ষর না করার নির্দেশ দেওয়া হয় ইসরায়েলি কূটনীতিকদের।
ইসরায়েলি কূটনীতিকরা এই সিদ্ধান্ত এবং এর ফলে সৃষ্ট ক্ষতির প্রতি ক্ষুব্ধ। একজন কূটনীতিক ওয়াইনেটকে বলেছেন, আমরা কোনো ব্যাখ্যা পাইনি। কেবল মুছে ফেলার জন্য একটি স্পষ্ট নির্দেশ পেয়েছি। যখন আমরা জিজ্ঞাসা করি, তখন আমাদের বলা হয়েছিল যে বিষয়টি পর্যালোচনাধীন। এটি আমাদের সন্তুষ্ট করতে পারেনি। অবশ্যই আমরা যাদের কাছে ইসরায়েলের প্রতিনিধিত্ব করি তাদের জনসাধারণকেও সন্তুষ্ট করেনি।
অন্য একজন বলেছেন, ‘আমরা শোকের শব্দ মুছে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এটি খারাপ দেখাচ্ছে, খুব খারাপ।’
ধারণা করা হচ্ছে, গাজা গণহত্যার বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় পোপ ফ্রান্সিসকে সম্মান জানাতে চায় না ইসরায়েল। ২০২৩ সালে ৭ অক্টোবরে ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামাসের আক্রমণের পর শুরু হওয়া যুদ্ধে এখন পর্যন্ত গাজায় প্রাণ হারিয়েছেন ৫১ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি। পোপ এই ঘটনাকে গণহত্যার শামিল বলে মনে করেন এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এর নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, গাজার শিশুদের কান্না শুনতে পাচ্ছেন? শান্তি চাই তাদের জন্য, ক্ষমা নয় যুদ্ধবাজদের জন্য।
পোপ ফ্রান্সিস কেবল ধর্মীয় নেতা নন- তিনি ছিলেন মানবতার কণ্ঠস্বর। জীবনের শেষ মুহূর্তেও তিনি যেন একটিই কথা বলে গেলেন- ‘যুদ্ধ নয়, শান্তি’।
এ ছাড়া গাজায় বাস্তুচ্যুত খ্রিস্টানদের খোঁজ নিতেন পোপ ফ্রান্সিস। নিয়মিত ফোন করতেন গাজা শহরের হলি ফ্যামিলি ক্যাথলিক চার্চে। গাজার চলমান সংঘাত নিয়ে তিনি একাধিকবার উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, এটি একটি নাটকীয় এবং দুর্ভাগ্যজনক পরিস্থিতি।
মন্তব্য করুন