ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস আবারও তাদের হাতে থাকা এক জিম্মির ভিডিও প্রকাশ করেছে। ভিডিওতে ইসরায়েলি বন্দি এলকানা বোহবোতকে পরিবারের উদ্দেশে আবেগঘন বার্তা দিতে দেখা যাচ্ছে। তিনি বাাঁচার আকুতি জানিয়েছেন এবং তাকে মুক্ত করতে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের কাছে সহযোগিতা কামনা করেছেন।
রোববার (২০ এপ্রিল) ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল এই ভিডিও প্রকাশের কথা নিশ্চিত করেছে। সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, হামাস কর্তৃক প্রকাশ করা এলকানা বোহবোতের তৃতীয় ভিডিও এটি।
ভিডিওতে দেখা যায় বোহবোত বলছেন, ‘আমার জন্য তোমরা যা পার করো! আমার শরীর ভালো নেই। আমি ভয় পাচ্ছি- মরে যাব কি না জানি না।’ বোহবোত তাকে মুক্ত করতে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের কাছে সহযোগিতা চান। তিনি বলেন, তিনি রাষ্ট্র-সরকার সবার কাছেই সাহায্যের আবেদন জানাচ্ছেন।
ভিডিওতে বোহবোতকে তার পরিবারের সঙ্গে প্রতীকী ফোনালাপ করতে দেখা যাচ্ছে। বোঝা যাচ্ছে, হামাস সদস্যদের নির্দেশেই তিনি এটা করছেন। ফোনকলে তিনি তার স্ত্রী ও ছেলেকে বলছেন, তিনি এখনো ঘরে তাদের কাছে ফিরে যাওয়ার স্বপ্ন দেখেন।
ক্যামেরার সামনে তাকে বলতে শোনা যায়, ‘আমি আইডিএফের (ইসরাইলি সামরিক বাহিনী) কাছেও আবেদন করেছি। আমি শুনেছি যে, তারা যুদ্ধ বন্ধ করে আমাদের মুক্তি দেওয়ার জন্য একটি আবেদনপত্রে স্বাক্ষর করছে।’
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলার দিন দুশ জনের বেশি ইসরায়েলিকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যায় হামাস। এরপর পরবর্তীতে এসব জিম্মির বহু ভিডিও প্রকাশ করেছে গোষ্ঠীটি। এসব ভিডিওতে তারা মূলত যুদ্ধ বন্ধ করে তাদের মুক্তির আবেদন জানান।
গাজায় এখনো প্রায় ৫৯ জিম্মি রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ২৪ জন জীবিত বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর মধ্যে ২০ জনের জীবিত থাকার প্রমাণ ভিডিও বা বার্তার মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয়েছে। তাদের অন্যতম এলকানা বোহবোত।
হামাস এখন পর্যন্ত বোহবোতের অন্তত তিনটি ভিডিও প্রকাশ করেছে। সবশেষ ভিডিওটি গত শনিবার (১৯ এপ্রিল) প্রকাশ করা হয়। যদিও জিম্মিদের নিয়ে হামাসের ভিডিওগুলো তাদের নির্দেশনায় তৈরি হয়। তবে বোহবোত আগের একটি ভিডিওতে জোর দিয়ে বলেছিলেন, তিনি নিজেই হামাসকে তার ভিডিও তৈরি করতে বলেছিলেন এবং ভিডিওর কথাগুলো তার নিজের।
এর আগে গত মাসে হামাস প্রকাশিত ভিডিওতে বোহবোত বলেন, ‘আমিই এই ভিডিওগুলো তৈরি করতে বলেছিলাম। হামাস আমাকে এই ভিডিওগুলো তৈরি করতে বলেনি। এটি কোনো মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ নয়।’
বোহবোতের ভিডিও প্রকাশের পর শনিবার রাতে জিম্মিদের পরিবারগুলো তেল আবিবের জিম্মি স্কোয়ারে সাপ্তাহিক বিক্ষোভ সমাবেশ করে। ওই সমাবেশে পরিবারগুলো আবারও তাদের প্রিয়জনদের দ্রুত মুক্ত করতে নেতানিয়াহু সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
মন্তব্য করুন