অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের প্রস্তাবিত সর্বশেষ যুদ্ধবিরতি চুক্তিকে ‘অসম্ভব শর্তে পূর্ণ’ উল্লেখ করে তা প্রত্যাখ্যান করেছে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস। সংগঠনটি জানায়, গাজায় গণহত্যা বন্ধ ও সেনা প্রত্যাহারের প্রতিশ্রুতি ছাড়া কোনো ‘আংশিক চুক্তি’ মেনে নেওয়া হবে না।
শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, হামাসের প্রধান আলোচক খলিল আল-হাইয়া অভিযোগ করেছেন, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এমন কিছু শর্ত দিয়েছে, যেগুলোর বাস্তবায়ন হলে যুদ্ধ থামবে না, বরং আরও বিস্তৃত হবে।
ইসরায়েলের সর্বশেষ প্রস্তাবে বলা হয়েছে, প্রাথমিকভাবে ১০ জন ইসরায়েলি জিম্মি মুক্তির বিনিময়ে ৪৫ দিনের যুদ্ধবিরতি দেওয়া হবে। এছাড়া হামাসের পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণ, কিছু ফিলিস্তিনি বন্দির মুক্তি, গাজায় মানবিক সহায়তার প্রবেশ এবং ভবিষ্যৎ আলোচনার সুযোগের কথাও উল্লেখ রয়েছে।
তবে এই প্রস্তাবকে সাফ অগ্রহণযোগ্য হিসেবে নাকচ করে দিয়েছে হামাস। খলিল আল-হাইয়া বলেন, আমরা কোনো এমন চুক্তি মানব না যা গণহত্যার ধারাবাহিকতা রক্ষা করে। অস্ত্র সমর্পণের প্রস্তাব বাস্তবতাবর্জিত। কারণ, প্রতিরোধ ও সশস্ত্র সংগ্রাম আমাদের দখলদারবিরোধী লড়াইয়ের অংশ। এটা ফিলিস্তিনিদের জন্মগত অধিকার।
তিনি আরও বলেন, এই প্রস্তাব আসলে ইসরায়েলের রাজনৈতিক লক্ষ্য অর্জনের একটি মাধ্যম। তারা মানবিক বিপর্যয় ও দুর্ভিক্ষ ব্যবহার করে আমাদের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে চায়।
হামাসের দাবি, তারা এমন একটি চুক্তিতেই সায় দেবে যেখানে গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা পুরোপুরি প্রত্যাহার করবে এবং নিরীহ ফিলিস্তিনিদের গণহত্যা বন্ধের নিশ্চয়তা থাকবে।
প্রসঙ্গত, গত কয়েক সপ্তাহে ইসরায়েল গাজার প্রায় ৩০ শতাংশ এলাকা দখল করেছে। যুদ্ধবিরতির আলোচনার মাঝেই গাজায় চালানো ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত দেড় হাজার ফিলিস্তিনি। অক্টোবর ২০২৩ থেকে শুরু হওয়া এই অভিযানে এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ৫০ হাজারের বেশি মানুষ, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।
পরিস্থিতির ক্রমাগত অবনতির মাঝে এই প্রতিরোধ ও প্রত্যাখ্যান মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উত্তেজনার সম্ভাবনা তৈরি করছে।
মন্তব্য করুন