লোহিত সাগরে যুক্তরাষ্ট্রের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে ইয়েমেনিরা পাল্টা সামরিক অভিযান অব্যাহত রাখায় বিপদে পড়েছে মার্কিন বাহিনী। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ন্যাশনাল ইন্টারেস্ট ‘হুতিরা কীভাবে ওয়াশিংটনকে ছাড়িয়ে গেল’ এই শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেখানে তারা লিখেছে- মার্কিন নৌবাহিনীর দুর্বলতা এবং তাদের ওপর অতিরিক্ত প্রেসারকে বুদ্ধিমত্ত্বার সঙ্গে কাজে লাগাচ্ছে হুতিরা।
প্রতিবেদন বলা হয়, ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জলপথ লোহিত সাগরের নিয়ন্ত্রণ নিতে সক্ষম হয়েছে। এই জলসীমায় এখন আর যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা কাজ করছে না।
ন্যাশনাল ইন্টারেস্টের মতে, মার্কিন নৌবাহিনী এবং তার মিত্রদের ব্যাপক হামলা সত্ত্বেও ইয়েমেনিরা লোহিত সাগরের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং প্রায় ২ বছর ধরে কৌশলগত এই জলপথ অবরুদ্ধ করে রেখেছে। ফলস্বরূপ, বেশিরভাগ জাহাজ দক্ষিণ আফ্রিকার কেপ অফ গুড হোপের চারপাশে দীর্ঘ এবং ব্যয়বহুল পথ বেছে নিতে বাধ্য হয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইয়েমিনিদের এই অগ্রগতি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বিপজ্জনক পরিণতি ডেকে আনতে পারে। এই পরিস্থিতি সৃষ্টির প্রধান কারণ হলো প্রযুক্তিগত অগ্রগতি, ড্রোন এবং ভূমিভিত্তিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা।
ন্যাশনাল ইন্টারেস্ট আরও জানিয়েছে, মার্কিন নৌবাহিনীর উন্নত ও ব্যয়বহুল বিমানবাহী রণতরী এবং জাহাজগুলো এই ধরনের যুদ্ধের জন্য উপযুক্ত নয় এবং নতুন অবস্থার সাথে খাপ খাইয়ে নিতে তাদের বছরের পর বছর সময় লাগতে পারে।
অন্যদিকে, চীনের হুমকিসহ অন্যান্য চ্যালেঞ্জগুলোও বহাল রয়েছে। চীনের ৪০০ টিরও বেশি যুদ্ধজাহাজ থাকলেও মার্কিন প্রশান্ত মহাসাগরীয় নৌবহরে মাত্র ২০০টি জাহাজ আছে। যুক্তরাষ্ট্রের পুরাতন শিল্প ও জাহাজ নির্মাণ অবকাঠামোর কারণে সংখ্যার দিক থেকে তাদের নৌবাহিনী চীনের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারছে না।
তবে, মার্কিনিরা ফিলিপাইন, জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়ার মতো তাদের মিত্রদের রক্ষা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং তাইওয়ানকে রক্ষা করার জন্যও তাদের অঙ্গীকার রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র এত কিছু করার পরও লোহিত সাগরের মতো গুরুত্বপূর্ণ জলপথ জাহাজ চলাচলের জন্য নিরাপদ করতে পারেনি।
মন্তব্য করুন