মধ্যপ্রাচ্যের শক্তিশালী দেশ ইরানের সঙ্গে যত দ্রুত সম্ভব পারমাণবিক চুক্তি করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। শনিবার ওমানের রাজধানী মাস্কাটে ইরান-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। এতে অংশ নেন ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিত্ব করেন ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক দূত স্টিভ উইটকোফ। বৈঠক শেষে ইরানের পক্ষ থেকে জানানো হয়, যুক্তরাষ্ট্র দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের সঙ্গে চুক্তি করতে আগ্রহী।
ইরানের সঙ্গে প্রায় ৪০ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। তা সত্ত্বেও ২০১৫ সালে তাদের মধ্যে পারমাণবিক চুক্তি হয়েছিল। কিন্তু ২০১৮ সালে এই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এবার নতুন করে পারমাণবিক ইস্যুতে তেহরানের ওয়াশিংটনকে পরোক্ষ আলোচনায় বসতে বাধ্য করাকে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ইরানের প্রথম গোল বলে অভিহিত করেছেন বিশ্লেষকরা।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক আরব বিশ্বের সিনিয়র বিশ্লেষক আব্দুল বারি আতওয়ান বলেন, ওমানের রাজধানী মাস্কাটে শুরু হওয়া ‘ইচ্ছার যুদ্ধ’ খেলায় ইরান যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে একটি বড় গোল করতে সফল হয়েছে। কারণ পরোক্ষ আলোচনার বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গেছে, তারা ‘সরাসরি’ আলোচনা করতে চেয়েছিল কিন্তু ইরান তা প্রত্যাখ্যান করার পর ওয়াশিংটন এই আলোচনায় বসতে সম্মত হয়েছে। ইরানের আত্মবিশ্বাসেরও প্রসংসা করেন তিনি।
আতওয়ান আরও বলেন, ইরানিরা অভিজ্ঞ কূটনীতিক আব্বাস আরাকচির নেতৃত্বে এই আলোচনায় অংশ নিয়েছে। ট্রাম্পের হুমকি ও ভীতি প্রদর্শনের নীতির কাছে নতি স্বীকার করেনি তারা। উল্টো ইরান তাদের শর্ত যুক্তরাষ্ট্রের ওপর চাপিয়ে দিতে সফল হয়েছে।
ইরানের শর্তের মধ্যে রয়েছে- যুক্তরাষ্ট্র শুধু পারমাণবিক ইস্যুতে কথা বলতে পারবে। ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা, ড্রোন, গাজা, লেবানন, ইয়েমেন ও ইরাকের প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে সম্পর্কের মতো বিষয়ে কথা বলতে পারবে না। যুক্তরাষ্ট্র শেষ পর্যন্ত ইরানের এসব শর্ত মেনেই আলোচনার টেবিলে বসতে বাধ্য হয়েছে।
সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানকে হুমকি দিয়ে বলেছেন, তেহরান যদি তার পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে ওয়াশিংটনের সঙ্গে কোনো চুক্তিতে না পৌঁছায়, তাহলে দেশটির ওপর বোমা হামলা চালানো হবে। পাশাপাশি যেসব দেশ ইরানের সঙ্গে বাণিজ্য করবে, তাদের ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে।
এর জবাবে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা আলী লারিজানি স্পষ্ট করে বলে দিয়েছেন, মিথ্যা অজুহাতে যুক্তরাষ্ট্র কিংবা ইসরায়েল যদি ইরানে হামলা চালায়, তাহলে প্রতিরক্ষামূলক উদ্দেশ্যে পারমাণবিক বোমা তৈরি করতে বাধ্য হবে তেহরান।
সূত্র : পার্সটুডে
মন্তব্য করুন