পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সদ্য সমাপ্ত পরোক্ষ আলোচনার পরই রাশিয়ার রাজধানী মস্কো সফরে যাচ্ছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি। পর্যবেক্ষকদের মতে, এই সফরের পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি একটি কৌশলগত বার্তা রয়েছে।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আরাঘচি চলতি সপ্তাহের শেষ দিকে মস্কো পৌঁছাবেন। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাকায়ি সোমবার (১৪ এপ্রিল) স্থানীয় সময় বলেন, ড. আরাঘচির এ সফর পূর্বনির্ধারিত। মাসকাট আলোচনার সাম্প্রতিক অগ্রগতি নিয়ে মতবিনিময়ের একটি সুযোগ হবে এটি। খবর এএফপি।
এর আগে শনিবার (১২ এপ্রিল) ওমানের রাজধানী মাসকাটে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের প্রতিনিধিদের মধ্যে পরমাণু চুক্তি নিয়ে এক পরোক্ষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে এটাই ছিল দুই দেশের মধ্যে প্রথমবারের মতো এমন আলোচনা। বৈঠকের পর উভয় পক্ষই একে ‘ইতিবাচক’ ও ‘গঠনমূলক’ বলে মন্তব্য করেছে।
তবে মস্কো সফর নিয়ে জল্পনা আরও বাড়ছে এই কারণে যে, রাশিয়া বরাবরই ইরানের ঘনিষ্ঠ মিত্র এবং পরমাণু চুক্তিতে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মাসকাটে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে হওয়া আলোচনা ও চুক্তির অগ্রগতি নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে মতবিনিময় করে পরবর্তী কূটনৈতিক অবস্থান নির্ধারণ করতেই এ সফর।
অপরদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি ইরান ইস্যুতে খুব শিগগিরই সিদ্ধান্ত নিতে চান। তারও আগে, পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা সফল না হলে ইরানে সামরিক অভিযান চালানোর হুমকিও দিয়েছেন তিনি।
এ পরিস্থিতিতে মস্কো সফরকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ইরানের একটি বার্তা হিসেবেও দেখা হচ্ছে- বিশেষ করে, তেহরান যে ওয়াশিংটনের চাপের মুখে এককভাবে সিদ্ধান্ত নেবে না, বরং নিজের মিত্রদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রেখেই এগোবে, সেটিই হয়তো এই সফরের কূটনৈতিক তাৎপর্য।
উল্লেখ্য, সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওস জানিয়েছে, আগামী শনিবার (১৯ এপ্রিল) ইতালির রোমে দ্বিতীয় দফার আলোচনা অনুষ্ঠিত হতে পারে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের মধ্যে। ফলে মস্কো সফরকে সামনে রেখে ইরান নিজেকে একটি সুসংহত ও কৌশলগত অবস্থানে নিয়ে যেতে চাইছে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের।
মন্তব্য করুন