যুদ্ধবিরতি ভেঙে ইসরায়েলের নতুন করে চালানো হামলায় ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় অন্তত ৩২২ শিশু নিহত এবং ৬০৯ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শিশু সংস্থা ইউনিসেফ।
সোমবার (৩১ মার্চ) এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায় সংস্থাটি। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম এএফপি-র এক প্রতিবেদনে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
ইউনিসেফ জানিয়েছে, নিহত ও আহত শিশুদের মধ্যে অনেকে ২৩ মার্চ গাজার দক্ষিণাঞ্চলের আল নাসের হাসপাতালের সার্জিক্যাল ওয়ার্ডে ইসরায়েলি হামলার শিকার হয়। সংস্থাটি বলছে, অধিকাংশ নিহত শিশুই বাস্তুচ্যুত ছিল এবং তারা অস্থায়ী তাঁবু বা ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিল।
২০২৩ সালে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর টানা কয়েক মাসের সংঘর্ষের পর চলতি বছরের সাময়িক যুদ্ধবিরতি হয়েছিল। তবে ১৮ মার্চ থেকে ইসরায়েল ফের ব্যাপক বিমান হামলা শুরু করে এবং স্থল অভিযান চালায়, যা গাজায় শিশুদের জন্য মারাত্মক বিপর্যয় ডেকে এনেছে।
ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল বলেন, গাজায় যুদ্ধবিরতি শিশুদের জন্য আশার আলো হয়ে উঠতে পারতো, যা পুনরুদ্ধারের সুযোগ দিত। কিন্তু তারা আবারও প্রাণঘাতী সহিংসতা ও দুর্দশার শিকার হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, সব পক্ষের উচিত আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রায় ১৮ মাস ধরে চলমান এই যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ১৫ হাজারের বেশি শিশু নিহত হয়েছে, ৩৪ হাজারের বেশি আহত হয়েছে এবং ১০ লাখের বেশি শিশু বারবার বাস্তুচ্যুত হয়ে মৌলিক সেবাসমূহ থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
ইউনিসেফ দ্রুত এই যুদ্ধের অবসান এবং ২ মার্চ থেকে ইসরায়েলের আরোপিত মানবিক সহায়তা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে। পাশাপাশি, অসুস্থ ও আহত শিশুদের দ্রুত সরিয়ে নেওয়ার প্রয়োজনীয়তার কথাও উল্লেখ করেছে সংস্থাটি।
ইউনিসেফ আরও বলেছে, খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি, আশ্রয় এবং চিকিৎসা সহায়তা ক্রমেই সংকটাপন্ন হয়ে উঠছে। এগুলোর অভাবে অপুষ্টি, রোগব্যাধি এবং অন্যান্য প্রতিরোধযোগ্য সমস্যা বাড়বে, যা শিশুদের মধ্যে আরও মৃত্যু ডেকে আনবে।
সংস্থাটি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, বিশ্ব এ হত্যাযজ্ঞ ও শিশুদের দুর্ভোগকে নির্বিকারভাবে দেখতে পারে না।
মন্তব্য করুন