মঙ্গলবার, ০১ এপ্রিল ২০২৫, ১৮ চৈত্র ১৪৩১
কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ৩০ মার্চ ২০২৫, ০৮:৩৮ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

ঈদের দিনে গাজায় ইসরায়েলের হামলা, ৫ শিশুসহ নিহত ২০

স্বজনের কবরের পাশে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন এক ফিলিস্তিনি নারী। ছবি : সংগৃহীত
স্বজনের কবরের পাশে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন এক ফিলিস্তিনি নারী। ছবি : সংগৃহীত

পবিত্র ঈদুল ফিতরের প্রথম দিনেও ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি সেনারা বোমা হামলা চালিয়েছে, যার ফলে কমপক্ষে ২০ জন ফিলিস্তিনির প্রাণহানি ঘটেছে। নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী ও শিশু।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোববার (৩০ মার্চ) গাজা উপত্যকায় ঈদ উদযাপনের সময় বোমা বিস্ফোরণ এবং কামানের গোলার আওয়াজে ফিলিস্তিনিদের বেঁচে থাকার আর্তনাদ চাপা পড়ে গেছে। এই বছরের ঈদ পুরোপুরি ভিন্ন চিত্র উপস্থাপন করেছে, যেখানে উৎসবের পরিবর্তে ধ্বংস, দুঃখ এবং মৃত্যুর মিছিল চলছে।

গাজার মধ্যাঞ্চলের আল মাওয়াসি এলাকায় স্থানীয় সময় রোববার সকালের দিকে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর বিমান থেকে গুলি চালানো হয়। আল জাজিরার সংবাদদাতা তারেক আবু আজজুম জানিয়েছেন, আমি এই মুহূর্তে ইসরায়েলি বিমান থেকে গুলির শব্দ শুনতে পাচ্ছি। দেইর আল বালাহর পূর্বাঞ্চলে গুলি চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী।

তিনি জানান, মাত্র ৩০ মিনিট আগে দেইর আল বালাহ থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরের আল মাওয়াসি এলাকায় একটি শিবিরে হামলা চালানো হয়, যেখানে শিশুসহ ৪ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।

এছাড়া, সংবাদদাতা আরও জানান, হামলায় একটি ফিলিস্তিনি পরিবারের সবাই প্রাণ হারিয়েছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ওই এলাকা মানবিক নিরাপদ অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করেছিল, তবে তা সত্ত্বেও এই হামলা চালানো হয়।

ফিলিস্তিনিরা এই ঈদে তাদের প্রিয়জনদের কবর জিয়ারত করতে গিয়ে অন্তত কিছুটা শান্তি খুঁজছে। অনেকেই তাদের প্রিয়জনদের হারানোর শোক কাটিয়ে ওঠার জন্য এই দিনটি পালন করছেন। ঈদ উদযাপনের জন্য সাধারণত যে আনন্দ এবং উল্লাস থাকে, রোববার তা গাজায় অনুপস্থিত ছিল।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঈদের দিন যে শিশুরা নতুন পোশাক পরত, তারা এখন ক্ষুধার্ত এবং মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। গাজার বাসিন্দাদের নিরাপত্তা নেই, উৎসবের খাবারও নেই।

গাজার বাসিন্দারা এখন নিজের ঘর-বাড়ি হারিয়ে, পরিবারকে হারিয়ে, তাদের জীবনের সবচেয়ে কঠিন সময় পার করছেন। ইসরায়েলি বাহিনী ঈদের দিনে গাজার বসতিগুলো ধ্বংস করে চলেছে, আর এতে তাদের ঘরবাড়ি ও প্রয়োজনীয় জীবনযাত্রার সামগ্রী হারিয়ে যাচ্ছে।

ঈদের উৎসবের পরিবর্তে গাজার অনেক মানুষ তাদের প্রিয়জনদের কবর জিয়ারত করেছেন, এমন এক শোকাবহ পরিবেশে। আল আকসা হাসপাতালের মর্গে এক মায়ের দৃশ্য ছিল অত্যন্ত মর্মান্তিক, যিনি শনিবার ইসরায়েলি হামলায় তার স্বামীকে হারিয়ে নিজের মেয়েকে নিয়ে স্বামীর লাশের বিদায় জানাতে এসেছিলেন।

গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনিদের এই নির্মম দুর্দশার কোনো শেষ নেই। ঈদ সেখানে শুধু এক ভয়াবহ বাস্তবতা হয়ে উঠেছে, যেখানে মৃত্যুর মিছিল, ক্ষুধা এবং ধ্বংস ছাড়া আর কিছুই নেই।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সাভারে নৈশপ্রহরীকে গুলি করে হত্যা

ভারতে আতশবাজি কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ, ১৮ জনের মৃত্যু

যশোরের চৌগাছায় বৃহৎ গ্রামীণ উৎসব

টাঙ্গাইলে ফেসবুকে কমেন্টের জেরে বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর

আধিপত্য বিস্তারে স্বেচ্ছাসেবক দল ও যুবদলের সংঘর্ষ, আহত ১০

বুয়েটের নতুন শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ সতর্কতা

ঘুরে দাঁড়াচ্ছে ‘সিকান্দার’, দুই দিনে ১০০ কোটি পার

জুলাই বিপ্লবে শহীদ ডা. রুবেলের পরিবারকে তারেক রহমানের ঈদ উপহার

সংস্কার সংস্কারের মতো চলবে, নির্বাচন নির্বাচনের মতো : মির্জা ফখরুল

আফগানিস্তানকে শিগগিরই সুখবর দেবেন পুতিন

১০

মিয়ানমারে ভূমিকম্প : মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৭১৯

১১

ভূমিকম্প বিধ্বস্ত মিয়ানমার / মিয়ানমারে উদ্ধারকারী দল পাঠাল বাংলাদেশ

১২

গ্রেপ্তার আতঙ্কে ঈদ আনন্দ নেই বিএনপি নেতাকর্মীদের পরিবারে

১৩

‘আ.লীগের এক লাখের বেশি নেতাকর্মী দিল্লিতে বসে ষড়যন্ত্র করছে’

১৪

মুক্তির প্রথম দিনই পাইরেসির কবলে শাকিবের ‘বরবাদ’ 

১৫

আ.লীগকে কোনো দিন রাজনৈতিকভাবে দাঁড়াতে দেব না : উপদেষ্টা মাহফুজ

১৬

ঈদের রাতে অস্ত্রের মুখে নৈশপ্রহরীর স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ

১৭

ইসরায়েলি হামলায় গাজায় শেষ ১০ দিনে ৩২২ শিশু নিহত : জাতিসংঘ

১৮

অসংখ্য পরিবারের ঈদ আনন্দ কেড়ে নিয়েছে ফ্যাসিস্ট আ.লীগ : রেজাউল করিম

১৯

জুলাই বিপ্লবের মাধ্যেমে আল্লাহ জমিনকে উন্মুক্ত করে দিয়েছে : মাওলানা মমতাজ

২০
X