ইসরায়েলে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়েছে। রোববার সকালে ইয়েমেন থেকে ইরান-সমর্থিত হুথিরা ক্ষেপণাস্ত্রটি ছোড়ে। খবর দ্য টাইমস অব ইসরায়েলের।
তবে আঘাত হানার আগেই ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রটি ভূপাতিত করে ইসরায়েলের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। দেশটির সেনাবাহিনী জানিয়েছে, এই হামলায় কোনো হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। কেবল মধ্য ইসরায়েলজুড়ে সাইরেন বেজে ওঠে। এতে জনগণের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আইডিএফ মুহূর্তে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় করে ক্ষেপণাস্ত্রটি প্রতিহত করতে সমর্থ হয়। তা দেশের সীমান্ত অতিক্রম করার আগেই ভূপাতিত করা হয়েছে বলে দাবি তাদের।
মঙ্গলবার গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী নতুন করে আক্রমণ শুরু করার পর থেকে এটি ছিল ইসরায়েলের উপর পঞ্চম হুথি হামলা।
এর আগে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা বন্দর নগরী হোদেইদার বিমানবন্দরে হামলার জন্য আমেরিকাকে দায়ী করে। তারা এর কড়া জবাব দেওয়ার অঙ্গীকার করে। এর একদিন পরই এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করা হলো।
হুথিদের এ হামলা নতুন নয়। গাজায় নতুন করে যুদ্ধ শুরু হলে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা ইসরায়েলের বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরের দিকে একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের দাবি করে। তবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী সেই ক্ষেপণাস্ত্রটিও প্রতিহত করার দাবি করেছে।
এদিকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দক্ষিণ লেবাননে বিমান হামলা চালিয়েছে। সে সঙ্গে কামান থেকেও গোলাবারুদ বর্ষণ করা হয়। শনিবার (২২ মার্চ) এ হামলা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, এর আগে লেবানন থেকে ইসরায়েলে রকেট হামলা হয়েছে। তারা সীমান্তের ওপার থেকে ছোড়া সেই রকেট প্রতিহত করেছে। যা ইসরায়েল ও লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর মধ্যে এক বছর ধরে চলা যুদ্ধের অবসান ঘটানো যুদ্ধবিরতিকে হুমকির মুখে ফেলছে। এরপরই পাল্টা হামলা চালিয়ে বসে ইসরায়েল।
গাজা যুদ্ধ নতুন করে শুরুর পর এবার লেবাননে হামলা উত্তেজনা আরও বাড়াল। এতে ফের পুরোদমে লেবানন যুদ্ধের দামামা বাজল।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা তাদের সামরিক শক্তি বাড়িয়েছে। তারা দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ আরও বিস্তৃত করেছে। বিশেষ করে, সৌদি আরবের কাছে এটি একটি বড় হুমকি হিসেবে দেখা দিয়েছে। কারণ সৌদি আরবের নিরাপত্তা স্বার্থ এতে সরাসরি প্রভাবিত হচ্ছে। হুতি গোষ্ঠীর মূল সমর্থক দেশ ইরান। এরই মধ্যে তারা ইয়েমেনের রাজধানী সানা ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। ২০১৪ সালে হুতিরা ইয়েমেনের রাজধানী সানা দখল করলে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আবদরাব্বু মনসুর হাদি দেশ থেকে পালাতে বাধ্য হয়। তখন থেকেই ইয়েমেনের গৃহযুদ্ধের উত্তাপ বাড়ে। ২০১৫ সালে সৌদি আরব নেতৃত্বাধীন একটি সামরিক জোট ইয়েমেনে হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে হামলা শুরু করে। তবে সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন জোট তাদের লক্ষ্য পূরণ করতে ব্যর্থ হয়। এই যুদ্ধে হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। ফলে দেশটি বিপুল মানবিক সংকটের মধ্যে পড়ে।
মন্তব্য করুন