ইসরায়েলে আঘাত হানতে সক্ষম এমন ড্রোন তৈরি করেছে ইরান। ড্রোনটির নাম দেওয়া হয়েছে মোহাজের-১০। ইরানের এই ড্রোন যুক্তরাষ্ট্রের এমকিউ-৯ রিপারের আদলে বানানো হয়েছে। অনুষ্ঠানে একটি ভিডিওতে দেখানো হয় ড্রোনটি অজ্ঞাত একটি বিমানঘাঁটির ওপর দিয়ে উড়ে ভিডিও ধারণ করেছে। বলা হয়েছে, বিভিন্ন ধরনের বোমা ও রাডার-প্রতিরোধী সরঞ্জাম বহন করতে পারে মোহাজের-১০। সেই সঙ্গে এটি নজরদারিতে সক্ষম।
প্রতিরক্ষা শিল্প দিবস উপলক্ষে ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এবং সশস্ত্র বাহিনী মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) এটি উন্মোচন করে। ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি এবং সেনাবাহিনীর জ্যেষ্ঠ কমান্ডারদের পাশাপাশি ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের (আইআরজিসি) সদস্যরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
ইরানের সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, গত শতকের আশির দশকে যখন ইরাক-ইরান যুদ্ধ চলছিল, তখন এই ড্রোনের প্রথম সংস্করণটি তৈরি করেছিল তেহরান। সর্বশেষ সংস্করণ মোহাজের-১০ প্রায় ৩০০ কেজি ওয়ারহেড বা যুদ্ধসরঞ্জাম বহন করতে পারে। ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২১০ কিলোমিটার বা ১৩০ মাইল গতিতে উড়তে পারে। এমনকি বহন করতে পারে ৪৫০ লিটার বা ১২০ গ্যালন জ্বালানি।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মোহাজের-১০ প্রায় ৭ হাজার মিটার ওপর দিয়ে বিরতিহীনভাবে ২ হাজার কিলোমিটার ভ্রমণ করতে পারে। এর অর্থ হলো, ড্রোনটি ইরান থেকে উড়ে গিয়ে ইসরায়েলের যেকোনো লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালাতে সক্ষম।
মোহাজের-১০ নিয়ে ইরানের সংবাদমাধ্যমে একটি পোস্টার প্রকাশ করা হয়েছে। এতে ড্রোনটিকে ইসরায়েলের দিমোনা পারমাণবিক স্থাপনার ওপর মেঘের ভেতর দিয়ে উড়তে দেখা যায়। পোস্টারে ফারসি ও হিব্রু ভাষায় লেখা ছিল, ‘প্রস্তরযুগে ভ্রমণের জন্য প্রস্তুত হও’।
ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি দেশটির রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যমে বলেন, ‘সামরিক খাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে ইরান। এর মধ্য দিয়ে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পর্যায়ে ইরান নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন এসেছে।’
ইরানের বিরুদ্ধে ইউক্রেনে ব্যবহারের জন্য রাশিয়াকে মোহাজেরের আগের সংস্করণসহ বিভিন্ন ড্রোন সরবরাহের অভিযোগ করে আসছে পশ্চিমা দেশগুলো। তবে ইরান তা অস্বীকার করে। তেহরানের দাবি, মস্কোতে ড্রোন সরবরাহ করা হয়েছিল সত্যি, তবে সেটা যুদ্ধের কয়েক মাস আগে।
সিরিয়ায় ইরানপন্থিদের ঘাঁটি লক্ষ্য করে বিমান হামলা সম্প্রতি জোরদার করেছে ইসরায়েল। এসবের মধ্যে সোমবার অধিকৃত পশ্চিম তীরের হেবরন শহরে এক ইসরায়েলি শিক্ষককে তার ১২ বছরের মেয়ের সামনে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার পেছনে ইরানের হাত আছে বলে দাবি করেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এর একদিন পর ইসরায়েলে আঘাত হানতে সক্ষম মনুষ্যবিহীন এ সামরিক যান উন্মোচন করলো ইরান।
মন্তব্য করুন