গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল নতুন করে বিমান হামলা শুরু করার পর শত শত ফিলিস্তিনি নিহত হচ্ছেন। মুহূর্তে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হচ্ছে গত দুই বছরের যুদ্ধে টিকে থাকা ভবনগুলোও। নারী-শিশুর আর্তনাদে ভারী হয়ে গেছে আকাশ-বাতাস। এ পরিস্থিতিতেও ইসরায়েলি আক্রমণের অন্যতম গুটি জিম্মিদের মুক্তি দিতে নারাজ হামাস।
এমন তথ্য জানিয়েছে দ্য জেরুজালেম পোস্ট। বুধবার (১৯ মার্চ) এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল বিমান হামলা শুরু করার পরও জিম্মি ও যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিষয়ে হামাস তাদের অবস্থান নরম করছে না। গোষ্ঠীটি এ বিষয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছে এমন কোনো ইঙ্গিত এখনও পাওয়া যায়নি।
জেরুজালেম পোস্টকে গোপন সূত্র জানায়, এই বিষয়ে হামাসের অবস্থান পরিবর্তনের কোনো ইঙ্গিত নেই, কোনো লক্ষণ নেই।
এদিকে প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ এবং ঊর্ধ্বতন নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। দেশটির একজন কর্মকর্তা বলেন, বৈঠকে হামলার মাত্রা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যুদ্ধ পদক্ষেপগুলো আরও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। নেটজারিম করিডোরে স্থলবাহিনীর প্রবেশের মাধ্যমে আমরা যা দেখছি, তা কেবল শুরু। বর্তমানে ইসরায়েল গাজায় হামাসের শাসনের অবসানের লক্ষ্যে মনোনিবেশ করছে।
গাজার বিভিন্ন এলাকায় ইসরায়েলি হামলায় বুধবার (১৯ মার্চ) অন্তত ৭০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার গাজা প্রতিনিধি এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এই হামলার সঙ্গে ইসরায়েলি স্থলবাহিনীও যুক্ত হয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার যুদ্ধবিরতি ভাঙার পর থেকে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৪৩৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ১৮৩ জন শিশু।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধ আরও ‘তীব্র’ হবে এবং এটি দখলকৃত পশ্চিম তীরেও ছড়িয়ে পড়তে পারে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ হিসাব অনুসারে, ইসরায়েলি আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত অন্তত ৪৯ হাজার ৫৪৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং ১ লাখ ১২ হাজার ৭১৯ জন আহত হয়েছেন। গাজার সরকার পরিচালিত গণমাধ্যম অফিস জানিয়েছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়া হাজারো মানুষকে মৃত বলে ধরে নেওয়া হলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৬১ হাজার ৭০০-তে পৌঁছবে।
মন্তব্য করুন