পবিত্র রমজান মাসের মধ্যে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় সব ধরনের পণ্য সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েল।
এই সিদ্ধান্তটি নেওয়া হয়েছে যখন ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপের মেয়াদ বৃদ্ধির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু হামাসের এ প্রত্যাখ্যানের প্রতিক্রিয়া হিসেবে কঠোর এই পদক্ষেপ নিয়েছেন।
রোববার (২ মার্চ) সকাল থেকে গাজার দিকে কোনো পণ্যবাহী ট্রাক প্রবেশ করেনি, যার ফলে উপত্যকায় মানবিক সহায়তার প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম এপির এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এটি গাজার জনসাধারণের জন্য একটি বড় সংকট সৃষ্টি করেছে, বিশেষ করে রমজান মাসে যখন খাবার এবং অন্যান্য জরুরি পণ্যের প্রয়োজনীয়তা বেড়ে যায়।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু হামাসকে কঠোর হুমকি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, যদি হামাস যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বৃদ্ধি নিয়ে নতুন প্রস্তাব মেনে না নেয়, তবে গাজায় আরও ভয়াবহ পরিণতি ভোগ করতে হবে। এর মাধ্যমে ইসরায়েলি সরকার হামাসকে চাপের মধ্যে রাখতে চায়।
ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস এ পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করেছে এবং তাদের মতে, গাজায় ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ করা হচ্ছে শুধু নির্যাতনের উদ্দেশ্যে, যা যুদ্ধাপরাধ এবং যুদ্ধবিরতি চুক্তির স্পষ্ট লঙ্ঘন।
গাজার জনগণের জন্য মানবিক সহায়তা প্রবাহের সুযোগ প্রথম দফার যুদ্ধবিরতির সময়ই ছিল, তবে এই যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শনিবার (১ মার্চ) শেষ হয়েছে। এখন, ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে দ্বিতীয় দফার যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে আলোচনা চলছে, তবে এখন পর্যন্ত কোনো সমঝোতায় পৌঁছানো সম্ভব হয়নি।
দ্বিতীয় দফায় যুদ্ধবিরতির শর্ত হিসেবে গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনী প্রত্যাহার এবং কিছু জিম্মি মুক্তির বিষয়ে আলোচনা চলতে থাকে।
এদিকে, ইসরায়েল জানিয়েছে, তারা পবিত্র রমজান এবং ইহুদিদের পাসওভার উৎসব উপলক্ষে প্রথম দফার যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বৃদ্ধির প্রস্তাব সমর্থন করেছে।
এই প্রস্তাবটি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফের মাধ্যমে এসেছে। প্রস্তাবে হামাসকে তাদের হাতে থাকা জিম্মিদের অর্ধেককে প্রথম দিনেই মুক্তি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে এবং বাকি জিম্মিদের স্থায়ী যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠিত হলে মুক্তি দেওয়ার শর্ত দেওয়া হয়েছে।
যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়টি নিয়ে ইসরায়েলি সরকারের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের পর সরকার সাময়িকভাবে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানোর পক্ষে মত প্রদান করে, কিন্তু হামাসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দ্বিতীয় দফার যুদ্ধবিরতির নিশ্চয়তা ছাড়া তারা প্রথম দফার সম্প্রসারণে সম্মতি জানাবে না।
এমন পরিস্থিতিতে, গাজার জনগণের জন্য এই সংকট আরও গভীর হচ্ছে এবং যুদ্ধবিরতির ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে।
মন্তব্য করুন