আফ্রিকার দেশ সুদানে জাতিগত সহিংসতার প্রভাব পড়েছে সৌদি আরবে। দেশটিতে রমজান সামনে রেখে ভেড়ার দাম বেড়ে চলেছে। এর ফলে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন বহু আরব পরিবার।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) গালফ নিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রমজান মাসের আগমনের প্রস্তুতি চলছে সৌদি আরবজুড়ে। তবে এবার ভেড়ার দাম আকাশছোঁয়া, যা অনেক পরিবারের জন্য চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সুদানে চলমান যুদ্ধের কারণে ভেড়া রপ্তানিতে বিঘ্ন ঘটায় সৌদি বাজারে ভেড়ার দাম বেড়েছে। বিশেষ করে রমজান মাসে ইফতারের সময় ভেড়ার মাংসের চাহিদা অনেক বেশি থাকে, যা এই মূল্যবৃদ্ধিকে আরও ত্বরান্বিত করেছে।
সাওয়াকনি ভেড়ার চাহিদা ও মূল্যবৃদ্ধি সাওয়াকনি ভেড়া সৌদি বাজারে সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রজাতিগুলোর মধ্যে একটি। এর মাংস নরম ও সুস্বাদু হওয়ায় রমজান মাসে পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে ইফতারিতে এই ভেড়ার মাংসের চাহিদা অনেক বেশি। তবে সুদানে চলমান সংঘাতের কারণে সাওয়াকনি ভেড়ার সরবরাহ কমে গেছে, যার ফলে দাম বেড়েছে।
সৌদি সংবাদপত্র আল-ওয়াতানের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সাওয়াকনি ভেড়ার দাম এখন এক হাজার ৭০০ থেকে দুহাজার সৌদি রিয়াল পর্যন্ত পৌঁছেছে। যদিও যুদ্ধের আগের দামের তুলনামূলক তথ্য দেওয়া হয়নি। ব্যবসায়ীরা জানান, সুদানের অস্থিরতা ও রপ্তানি বিঘ্নিত হওয়ায় ভেড়ার সরবরাহ কমেছে, যা দাম বাড়ার মূল কারণ।
সৌদি আরবের পশু ব্যবসায়ী আতেফ মোহাম্মদ বলেন, রমজানের আগে সবচেয়ে জনপ্রিয় ভেড়া হলো সাওয়াকনি। এর আকার বড় হওয়ায় বড় পরিবারের জন্য এটি আদর্শ। এছাড়া এর মাংসের গুণগত মান ও স্বাদ অনন্য।
তিনি উল্লেখ করেন, ভেড়ার ওজন ও বয়সের ওপর এর দাম নির্ভর করে। সাধারণত ৪০ থেকে ৬০ কেজি ওজনের ভেড়ার চাহিদা বেশি থাকে। ক্রেতারা ৬ মাস থেকে ১ বছর বয়সী ভেড়া পছন্দ করেন, কারণ এগুলোর মাংস বেশি নরম হয়।
জেদ্দার এক ব্যবসায়ী জানান, সুদানের সংঘাতের কারণে ভেড়ার সরবরাহ উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। তিনি বলেন, রমজান মাসে বেশিরভাগ পরিবার সাওয়াকনি ভেড়া পছন্দ করে। কেননা এর মাংসের গুণগত মান ও স্বাদ অনন্য। এটি খাঁটি লাল মাংস হিসেবে বিবেচিত হয় এবং উপসাগরীয় বাজারে এর চাহিদা অনেক বেশি।
সাওয়াকনি ভেড়ার বিশেষত্ব সাওয়াকনি ভেড়া শুধু তার মাংসের গুণগত মানের জন্যই নয়, এর বড় আকারের জন্যও বিখ্যাত। ৫০ কেজির বেশি ওজনের এই ভেড়া উচ্চ তাপমাত্রা ও খরাপ্রবণ অঞ্চলের মতো কঠোর পরিবেশেও টিকে থাকতে পারে। এ কারণে মরু অঞ্চলে এই ভেড়া পালন করা সহজ।
সরবরাহের তুলনায় চাহিদা বেশি থাকায় রমজান মাস যত এগিয়ে আসবে, ভেড়ার দাম আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে সৌদি নাগরিকদের জন্য রমজানের প্রস্তুতি কিছুটা চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠতে পারে।
সুদানের সংঘাতের প্রভাব শুধু আঞ্চলিকই নয়, বৈশ্বিক বাজারে এর প্রভাব পড়ছে, যা সৌদি আরবের মতো দেশগুলোর অর্থনীতিকেও প্রভাবিত করছে। রমজানের পবিত্র মাসে এই মূল্যবৃদ্ধি অনেক পরিবারের জন্য বাড়তি চাপ সৃষ্টি করতে পারে।
মন্তব্য করুন