ইরানের বর্তমান রাজধানী তেহরান নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত। ফলে রাজধানী স্থানান্তরের কথা ভাবছে দেশটি। হারানো ‘হারানো ভূস্বর্গে’ মাকরান এলাকাকে রাজধানী বানাতে চায় দেশটি।
মঙ্গলবার ( ১৮ ফেব্রুয়ারি) জাপান টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যানজট, ভূমিধস, পানি সংকট, সম্পদ ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা, চরম বায়ুদূষণ এবং ভূমির ধীরে ধীরে দেবে যাওয়ার মতো সমস্যাগুলো তেহরানের উন্নয়ন ও স্থায়িত্বকে হুমকির মুখে ফেলেছে। এই পরিস্থিতিতে ইরান সরকার একটি অভিনব সমাধানের কথা ভাবছে—রাজধানীকে সম্পূর্ণ অন্য স্থানে সরিয়ে নেওয়া।
ইরানের সংস্কারবাদী প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান সম্প্রতি এ ধারণাটি পুনরুজ্জীবিত করেছেন। তিনি তেহরানের ক্রমবর্ধমান চ্যালেঞ্জগুলোর কথা উল্লেখ করে বলেন, আমাদের দেশের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কেন্দ্র দক্ষিণে এবং সমুদ্রের কাছাকাছি স্থানান্তর করার কোনো বিকল্প নেই।
তেহরানের সমস্যাগুলো দিন দিন প্রকট হচ্ছে। শহরটির ভূমি প্রতি বছর প্রায় ২৫ সেন্টিমিটার করে দেবে যাচ্ছে, যা বিশ্বের দ্রুততম ভূমিধসের হারগুলোর মধ্যে একটি। এ ছাড়াও, যানজট এবং বায়ুদূষণ নাগরিক জীবনে মারাত্মক প্রভাব ফেলছে।
সরকারি মুখপাত্র ফাতেমেহ মোহাজেরানি জানিয়েছেন, রাজধানী স্থানান্তরের সম্ভাব্যতা নিয়ে গবেষণা চলছে। তিনি বলেন, মাকরান অঞ্চলকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হচ্ছে। মাকরান হলো ওমান উপসাগরের একটি উপকূলীয় এলাকা, যা ইরানের দক্ষিণের দরিদ্র সিস্তান-বালুচিস্তান প্রদেশ এবং প্রতিবেশী হরমুজপ্রণালির অংশজুড়ে বিস্তৃত।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি সম্প্রতি এক বক্তৃতায় বলেন, মাকরানের ‘হারানো স্বর্গ’-কে ইরান এবং অঞ্চলের ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক কেন্দ্রে পরিণত করতে হবে।
১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পর থেকে ইরান রাজধানী স্থানান্তরের কথা ভাবছে। কিন্তু আর্থিক ও লজিস্টিক চ্যালেঞ্জের কারণে এই পরিকল্পনাগুলো বারবার স্থগিত করা হয়েছে। তবে বর্তমান সরকারের পক্ষ থেকে এই ধারণাটি আবারও আলোচনায় এসেছে।
তেহরানের সমস্যাগুলো নিয়ে প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ান সতর্ক করে বলেছেন, বিদ্যমান নীতিগুলো অব্যাহত থাকলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।
মন্তব্য করুন