ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা পুনর্গঠনের জন্য নতুন পরিকল্পনা তৈরি করেছে মিসর। এই পরিকল্পনার মূল লক্ষ্য হলো গাজার ধ্বংসপ্রাপ্ত অবকাঠামো পুনরুদ্ধার করা এবং সেখানে বসবাসরত ফিলিস্তিনিদের পুনর্বাসন নিশ্চিত করা।
নতুন এই পরিকল্পনাটি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবের বিপরীতে একটি বিকল্প উদ্যোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে। ট্রাম্পের পরিকল্পনায় গাজাকে ফিলিস্তিনিদের জন্য বসবাসের অনুপযোগী করে তোলার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। তবে মিসর স্পষ্ট করেছে, তারা গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক উচ্ছেদ না করে বরং তাদের রেখেই পুনর্গঠনে মনোযোগ দেবে।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বার্তা সংস্থা এপি মিসরের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আল-আহরামের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এই পরিকল্পনায় গাজা উপত্যকার ভেতরেই ‘নিরাপদ এলাকা’ গড়ে তোলার কথা বলা হয়েছে, যেখানে ফিলিস্তিনিরা থাকতে পারবে, যতক্ষণ না পুনর্গঠনের কাজ শেষ হয়।
এদিকে মিসর এই পুনর্গঠন পরিকল্পনা নিয়ে ইউরোপীয় দেশগুলোর পাশাপাশি সৌদি আরব, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে আলোচনা করছে। একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের মাধ্যমে পুনর্গঠনের জন্য তহবিল সংগ্রহেরও পরিকল্পনা রয়েছে।
এ বিষয়ে মিসরীয় ও পশ্চিমা কর্মকর্তারা জানান, বিষয়টি এখনো আলোচনার পর্যায়ে রয়েছে, তবে এটি গাজার ভবিষ্যৎ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
মিসরের পরিকল্পনায় একটি নতুন ফিলিস্তিনি প্রশাসন গঠনের কথা বলা হয়েছে, যা হামাস বা ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সরাসরি নিয়ন্ত্রণে থাকবে না। এছাড়া, গাজায় একটি নিরাপত্তা বাহিনী গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে, যেখানে আগের ফিলিস্তিনি নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের পাশাপাশি মিসরীয় ও পশ্চিমা প্রশিক্ষিত বাহিনী অন্তর্ভুক্ত হতে পারে।
অপরদিকে ইসরায়েল গাজা থেকে হামাসকে সম্পূর্ণ নির্মূল করার পরিকল্পনা করেছে এবং পুনর্গঠনের অর্থায়নের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মহলও হামাসের শাসন থাকার বিষয়টিকে বাধা হিসেবে দেখছে। তবে মিসরের পরিকল্পনা হামাসের বিকল্প শাসনব্যবস্থা গড়ে তোলার মাধ্যমে এই সংকট মোকাবিলার চেষ্টা করছে।
ফ্রান্স ও জার্মানি মিসরের উদ্যোগকে সমর্থন জানিয়েছে। মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি এই পরিকল্পনা নিয়ে ফরাসি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। এ সপ্তাহে সৌদি আরবের রিয়াদে মিসর, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব ও জর্ডানের কর্মকর্তারা এই বিষয়ে আলোচনা করবেন।
চলতি মাসের ২৭ ফেব্রুয়ারি আরব দেশগুলোর শীর্ষ সম্মেলনে এই পরিকল্পনা উপস্থাপন করা হবে, যা গাজার পুনর্গঠন ও ভবিষ্যৎ শাসনব্যবস্থার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত বয়ে আনতে পারে।
মন্তব্য করুন