মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাজা দখল ও ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক উচ্ছেদের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন মার্কিন সিনেটররা। রিপাবলিকান সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম এই পরিকল্পনার প্রতি কড়া সমালোচনা করেছেন।
আর ডেমোক্র্যাট সিনেটর রিচার্ড ব্লুমেনথাল আশা প্রকাশ করেছেন যে, আরব রাষ্ট্রগুলো গাজার জন্য একটি কার্যকর বিকল্প পরিকল্পনা উপস্থাপন করবে।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর প্রকাশ করেছে।
মার্কিন কংগ্রেসের একটি দ্বিদলীয় প্রতিনিধি দল ১৭ ফেব্রুয়ারি তেল আবিবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সেখানে ট্রাম্পের গাজা সংক্রান্ত পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়।
এর আগে রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) নেতানিয়াহু ট্রাম্পের বিতর্কিত প্রস্তাবের প্রতি তার সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছিলেন। এরই মধ্যে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ সেনাবাহিনীকে এমন একটি পরিকল্পনা তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন, যাতে গাজার ফিলিস্তিনিরা ‘স্বেচ্ছায়’ দেশত্যাগ করতে পারেন।
কিন্তু সিনেটর গ্রাহাম, যিনি ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র এবং মার্কিন কংগ্রেসে পররাষ্ট্রনীতি ও জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে প্রভাবশালী নেতা, তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, গাজা দখলের জন্য আমেরিকা কোনোভাবেই এগিয়ে যাবে না।
অন্যদিকে, ব্লুমেনথাল ট্রাম্পের পরিকল্পনাকে সরাসরি ‘অসম্ভব’ বলে অভিহিত করেছেন।
ট্রাম্পের প্রস্তাব আরব বিশ্বজুড়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে। বেশ কয়েকজন বিশ্লেষক এই পরিকল্পনাকে জাতিগত নির্মূলের শামিল বলে উল্লেখ করেছেন।
সিনেটর গ্রাহাম বলেছেন, ‘ট্রাম্পের পরিকল্পনার কারণে আরব দেশগুলো গাজার জন্য একটি কার্যকর বিকল্প খুঁজতে বাধ্য হবে।
সিনেটর ব্লুমেনথাল জানান, জর্ডানের রাজা আবদুল্লাহ তাকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছেন যে, আরব দেশগুলো এমন একটি পরিকল্পনা উপস্থাপন করবে, যেখানে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিককরণ, ফিলিস্তিনিদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার, আঞ্চলিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং ইসরায়েলের নিরাপত্তার বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
গাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা করতে চলতি মাসেই বৈঠকে বসতে পারেন সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, জর্ডান এবং মিশরের কর্মকর্তারা। তারা এমন একটি বিকল্প পরিকল্পনা তৈরি করতে চান, যা ট্রাম্পের বিতর্কিত প্রস্তাবের বিপরীতে কাজ করবে।
ট্রাম্পের পরিকল্পনা ইতোমধ্যে ১৬ মাস ধরে চলা গাজা যুদ্ধের পর পুরো আরব বিশ্বের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে। বিশেষ করে আরব দেশগুলোতে এই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ও উদ্বেগ বাড়ছে।
মন্তব্য করুন