ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় চলমান ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা এই সপ্তাহেও অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দূত স্টিভ উইটকফ।
এই আলোচনার অংশ হিসেবে ইসরায়েলি প্রতিনিধিরা কায়রোর উদ্দেশে রওনা করেছেন। তবে, মধ্যপ্রাচ্য সফররত মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্ক রুবিও’র হামাস সম্পর্কিত মন্তব্যে নতুন করে যুদ্ধবিরতির ভবিষ্যৎ নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে। খবর আল-জাজিরা।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিও বলেছেন, ইসরায়েলের লক্ষ্যকে পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে বলেন, হামাসকে সম্পূর্ণ নির্মূল করতে হবে। তার এই মন্তব্য যুদ্ধবিরতির ভবিষ্যৎ নিয়ে আরও অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে।
রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) জেরুজালেমে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের কাছে রুবিও বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নতুন কৌশল নিয়ে এসেছেন, যা অতীতের ক্লান্তিকর নীতির পুনরাবৃত্তি নয়।
নেতানিয়াহু এই পরিকল্পনাকে ‘সাহসী’ আখ্যা দিয়ে বলেন, তিনি ও ট্রাম্প গাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে অভিন্ন কৌশল অনুসরণ করছেন।
এদিকে, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিও তার মধ্যপ্রাচ্য সফরের সময় সৌদি আরবে পৌঁছেছেন, যেখানে তিনি সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
তবে, তিনি আরব নেতাদের কঠোর সমালোচনার মুখে পড়তে পারেন, বিশেষত ট্রাম্পের বিতর্কিত গাজা পরিকল্পনার কারণে, যা মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতে ‘জাতিগত নিধন’।
ট্রাম্পের পরিকল্পনা অনুযায়ী, গাজা অঞ্চলের ফিলিস্তিনি জনগণকে উচ্ছেদ করে অঞ্চলটি পুনর্গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে হিজবুল্লাহ মহাসচিব শেখ নাইম কাসেমও কঠোর অবস্থান নিয়েছেন।
তিনি বলেন, এটি একটি রাজনৈতিক গণহত্যা। তার মতে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু গাজায় ১৫ মাসব্যাপী নৃশংস যুদ্ধ চালিয়েছেন এবং ট্রাম্পের নতুন নীতি আরও কঠোর।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদোলু এক প্রতিবেদনে জানায়, ইসরায়েলি সেনারা ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে নাবলুসের পুরাতন শহরে তল্লাশি চালিয়েছে এবং ফিলিস্তিনি একটি গাড়ি জব্দ করেছে। এর আগে ১৬ ফেব্রুয়ারি একই এলাকায় আরও একবার সামরিক অভিযান চালানো হয়।
অপরদিকে গাজা উপত্যকার পরিস্থিতি ক্রমশ ভয়াবহ হয়ে উঠছে, সেখানে ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে প্রতিদিনই নতুন লাশ পাওয়া যাচ্ছে। ১৬ ফেব্রুয়ারি আরও ছয়জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে এবং এ পর্যন্ত নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা ৪৮,২৭১ জনে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
এই যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা, মধ্যপ্রাচ্যের উত্তপ্ত পরিস্থিতি এবং ইসরায়েলি সেনাদের নির্যাতনমূলক কার্যক্রম নতুন প্রশ্ন ও চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে যুদ্ধবিরতির পরবর্তী ধাপ কার্যকরের ওপর।
মন্তব্য করুন