ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে প্রায় এক হাজার নতুন অবৈধ বসতি নির্মাণের পরিকল্পনা করেছে ইসরায়েল। বেথলেহেমের দক্ষিণে অবস্থিত কৌশলগত এলাকা ইফ্রাত বসতিতে এই নতুন আবাসন ইউনিটগুলো নির্মাণের জন্য একটি দরপত্র জারি করেছে নেতানিয়াহু প্রশাসন।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ পশ্চিম তীরে ৯৭৪টি নতুন আবাসন নির্মাণের পরিকল্পনা করছে। ইসরায়েলি ওয়াচডগ ‘পিস নাউ’-এর তথ্য অনুযায়ী, এসব আবাসন ইউনিট নির্মাণের ফলে ওই অঞ্চলের বাসিন্দাদের সংখ্যা প্রায় ৪০ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, পশ্চিম তীরের ইফ্রাত বসতির নতুন এই বসতি প্রকল্পটি দক্ষিণে পরিকল্পিত বেথলেহেম মেট্রোপলিসের বিকাশে বাধা সৃষ্টি করবে। যদি ইসরায়েল এই এলাকা সংযুক্ত করতে চায়, তাহলে এটি পুরো দক্ষিণ-পশ্চিম তীরের অংশের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে, কারণ হাইওয়ে ৬০-এর মাধ্যমে বেথলেহেমের উত্তরের সংযোগের উপর এই অঞ্চলের নির্ভরশীলতা রয়েছে।
ইসরায়েলি ওয়াচডগ ‘পিস নাউ’ বলছে, যখন ইসরায়েলের জনগণ জিম্মি মুক্তি ও গাজা যুদ্ধের সমাপ্তি নিয়ে আলোচনা করছে, তখন নেতানিয়াহু সরকার ফিলিস্তিনের পশ্চিমতীরে দ্রুত পরিকল্পিতভাবে অবৈধ বসতি নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের লক্ষ্য দখলকৃত পশ্চিমতীরে এমন বাস্তবতা তৈরি করা, যা ভবিষ্যতে ফিলিস্তিনের সঙ্গে শান্তি ও সমঝোতার সম্ভাবনাকে সম্পূর্ণ নস্যাৎ করবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এখন এটি স্পষ্ট যে, একমাত্র সামরিক পদক্ষেপ ইসরায়েলের সংঘাত বা নিরাপত্তার সমস্যা সমাধান করবে না। ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে একটি চুক্তি এবং সমঝোতা ছাড়া স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়।
নেতানিয়াহু সরকারের এই নতুন পদক্ষেপ ইসরায়েলি স্বার্থকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে এবং শান্তির পথে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। তারা একমাত্র সমঝোতা এবং আলোচনার মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠার পথকে অবরুদ্ধ করছে, যা ইসরায়েলের নিরাপত্তা ও ভবিষ্যৎ শান্তি নিশ্চিত করতে সাময়িকভাবে সহায়ক হতে পারে।
এই পদক্ষেপটি ফিলিস্তিন এবং ইসরায়েল দুই পক্ষের জন্যই দীর্ঘমেয়াদি সংঘাত এবং রাজনৈতিক উত্তেজনার কারণ হতে পারে এবং শান্তিপূর্ণ সমাধান সম্ভব করতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আরও চাপ সৃষ্টি করতে পারে।
মন্তব্য করুন