বাশার আল আসাদের ফেলে যাওয়া ভঙ্গুর অর্থনীতির কারণে বিপাকে পড়েছে সিরিয়া। দেশটির সরকারি কর্মকর্তাদের বেতনও দিতে পারছে না অন্তর্বর্তী সরকার। এমতাবস্থায় অর্থ জোগাড়ের জন্য মরিয়া হয়ে উঠছিল দামেস্ক। তবে সে সমস্যার আপাতত সমাধান মিলেছে। রাশিয়া থেকে সিরিয়ায় এসেছে হাজার হাজার কোটি সিরিয়ান পাউন্ড। এর আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় রাশিয়া থেকে আসা বিপুল পরিমাণ অর্থের খবর চাউর হয়েছিল।
আশা জাগানিয়া মনে হলেও রাশিয়া থেকে আসা অর্থের মূল্যমান খুবই কম। ঠিক কী পরিমাণ অর্থ এসেছে তা নিয়েও ভুল তথ্য ছড়িয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়। পরে শুক্রবার সিরিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, তারা রাশিয়া ফেডারেশনের কাছ থেকে ৩ হাজার কোটি সিরিয়ার পাউন্ড পেয়েছে। সোশ্যালে ছড়িয়ে পড়া তথ্যের সঙ্গে রাশিয়া থেকে আসা অর্থের পরিমাণের কোনো মিল নেই বলেও নিশ্চিত করেছে সিরিয়া।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিবৃতিতে বলা হয়, সিরিয়া ও দেশটির জনগণের অধিকারের টাকা শুক্রবার দেশে পৌঁছেছে। ক্ষমতাচ্যুত সরকার ও রাশিয়ার সঙ্গে যে চুক্তি সই হয়েছিল, তার অংশ হিসেবেই এ অর্থ সিরিয়ায় এসেছে। এই বিপুল পরিমাণ অর্থ গেল বছর শেষ হওয়ার আগেই সিরিয়ায় পৌঁছানোর কথা ছিল। তবে ডিসেম্বরের শুরুর দিকে বিদ্রোহীদের অভিযানের মুখে ক্ষমতা ছেড়ে পালিয়ে যান বাশার আসাদ।
সিরিয়ার সাবেক এই প্রেসিডেন্ট দেশটির টাকা রাশিয়া থেকে ছাপিয়ে আনার রীতি বানিয়ে ফেলেছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় নতুন মুদ্রিত এই অর্থ সিরিয়ায় এলো। সামনের মাসগুলোতে এই অর্থের পরিমাণ আরও বাড়বে বলেও জানাচ্ছে সিরিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এই বিপুল পরিমাণ অর্থ রাশিয়া থেকে প্লেনে করে দামেস্কের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়।
চলতি বছরের শুরু থেকেই সিরিয়ার বাজারে পাউন্ডের সংকট দেখা দেয়। দেশটিতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে সিরিয়ান পাউন্ডের সরবরাহ কমে যায়। ডলারের বিপরীতে দুর্বল হয়ে পড়ে সিরিয়ান পাউন্ড। দুই মুদ্রার বিনিময় হারে আকাশ-পাতাল তফাৎ দেখা দেয়। দেশটিতে ডলারপ্রতি ৯ থেকে ১০ হাজার সিরিয়ান পাউন্ড বিনিময় হচ্ছে। এমনকি ব্যাংকের এটিএমগুলোয় পর্যাপ্ত ছাপা টাকা নেই। তাই টানা দ্বিতীয় মাসের মতো টাকা তুলতে পারছে না লাখ লাখ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী।
তবে সহসাই এই পরিস্থিতির উন্নতি হবে না বলেই মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। উৎপাদন শুরু এবং বিনিয়োগ না বাড়লে অর্থনীতির অবস্থা নাজুকই থাকবে। আবার নির্বাচিত সরকার না এলে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল শারা বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না। আর অর্থনীতিকেও এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে না। যদিও সম্প্রতি বিভিন্ন দেশ দামেস্কের ওপর থাকা নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে; তবুও দামেস্কের অর্থনীতির সংকটের সমাধান সময়সাপেক্ষ।
মন্তব্য করুন