কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:২৭ পিএম
আপডেট : ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৩:৩২ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

ক্ষমা চাইলেন ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান। ছবি : সংগৃহীত
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান। ছবি : সংগৃহীত

নিজের ব্যর্থতার জন্য ক্ষমা চেয়েছেন ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল হারজি হালেভি। গাজা থেকে মুক্তি পাওয়া জিম্মিদের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি নিজের ব্যর্থতা স্বীকার করেন।

শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েলের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে এক বৈঠকে আইডিএফ প্রধান ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হামাসের হামলার আগে তাদের সতর্কতার সাথে গুরুত্ব সহকারে আচরণ না করার জন্য এবং তাদের দীর্ঘ বন্দিদশার জন্য সম্প্রতি মুক্তিপ্রাপ্ত চার জিম্মি সেনার কাছে ক্ষমা চেয়েছেন।

টাইমস অব ইসরায়েলি জানিয়েছে, হালেভি আগাম বার্গার, লিরি আলবাগ, নামা লেভি এবং কারিনা আরিয়েভের সাথে দেখা করেন। তারা প্রায় ১৫ মাস পর হামাসের বন্দিদশা থেকে সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছেন।

বৈঠকের আইডিএফ প্রধানের একটি মন্তব্য ফাঁস হয়েছে। এতে তিনি সেনাদের ‍উদ্দেশে বলেন, তোমাদের গুরুত্ব না দেওয়া ভুল ছিল, তোমরা অসাধারণ সৈনিক ছিলে, বন্দিদশায় তোমাদের যা অভিজ্ঞতা হয়েছিল তার জন্য আমি ক্ষমা চাইছি।

এর আগে গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসে ইসরায়েলে হামলা ঠেকাতে ব্যর্থতার দায়ে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন ইসরায়েলি সেনাপ্রধান। ইসরায়েলের চ্যানেল-১২ এ হালেভির সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে এ খবর প্রকাশ করে।

হালেভি ২০২৩ সালের শুরু থেকে আইডিএফের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। গত ৭ অক্টোবরের হামলা চলাকালে তিনি দায়িত্বে ছিলেন। এ সময় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হামাসের হামলায় ইসরায়েলের প্রায় ১২০০ সেনা নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া এ সময় আরও অন্তত ২৫১ জনকে জিম্মি করেছে তারা।

অন্যদিকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৪৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ১৭ হাজারের বেশি শিশু রয়েছেন। এখনও অন্তত ১১ হাজারের বেশি লোক নিখোঁজ রয়েছেন। অন্যদিকে এ হামলায় এক লাখ পাঁচ হাজার ৭০ জন আহত হয়েছেন।

গত এক বছরের বেশি সময় ধরে গাজায় হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। দেশটির অব্যাহত এ হামলায় সৃষ্ট ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কার করতে অন্তত ১৫ বছর সময় লাগবে। এজন্য প্রতিদিন ১০০টি লরি ব্যবহার করতে হবে।

জাতিসংঘের হিসাব মতে, গাজায় ভবন ধসে এ পর্যন্ত ৪২ মিলিয়ন টনেরও বেশি ধ্বংসস্তূপ জমা হয়েছে। এ ধ্বংসস্তূপগুলো যদি একসঙ্গে এক জায়গায় রাখা যায়, তাহলে তা মিসরের ১১টি গ্রেট পিরামিডের সমান হবে। এ ধ্বংসস্তূপ সরাতে ব্যয় হবে ৫০০ থেকে ৬০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৭ হাজার কোটি টাকার বেশি)।

ইউএন এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রামের হিসাব অনুসারে, গাজায় ১ লাখ ৩৭ হাজার ২৯৭টি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা অঞ্চলটির মোট ভবনের অর্ধেকের বেশি। ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের মধ্যে এক-চতুর্থাংশ পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। এ ছাড়া এক-দশমাংশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং এক-তৃতীয়াংশ বেশ খানিকটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব ভবনের ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে ফেলার জন্য ২৫০ থেকে ৫০০ হেক্টর জমির প্রয়োজন পড়বে।

গাজাভিত্তিক জাতিসংঘের এক কর্মকর্তা গার্ডিয়ানকে বলেন, ‘অবকাঠামোর যে পরিমাণ ক্ষতি করা হয়েছে, তা পাগলামির পর্যায়ে পড়ে, দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে একটি ভবনও নেই যেখানে ইসরায়েল হামলা চালায়নি।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রকৃত অর্থেই এ অঞ্চলের ভৌগোলিক চিত্র পরিবর্তিত হয়ে গেছে। যেখানে আগে পাহাড় ছিল না, এখন সেখানে পাহাড় হয়ে গেছে। দুই হাজার পাউন্ডের বোমাগুলো আক্ষরিক অর্থেই এ অঞ্চলের মানচিত্র বদলে দিয়েছে।’

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আটক ‘ডাকাতকে’ ছাড়িয়ে নিতে ছাত্রদল নেতার থানা ঘেরাও

লক্ষ্মীপুর পলিটেকনিকের শিক্ষক সোবহানকে পুলিশে দিলেন শিক্ষার্থীরা

সীমান্তে আটক ২ বাংলাদেশিকে ফেরত দিয়েছে বিএসএফ

ভিটামিন ‘ডি’ ঘাটতি ও প্রতিকার নিয়ে ভাবতে হবে এখনই

অতিরিক্ত দর্শনার্থী ঠেকাতে শের-ই-বাংলা মেডিকেলে চালু হচ্ছে কার্ড

পালাতে গিয়ে ছাদ থেকে আ.লীগ নেতার লাফ, অতঃপর...

আরব সাগরে যুদ্ধজাহাজ নিয়ে হাজির রাশিয়া-ইরান, আসছে চীন

ঢাকায় আজও বইছে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বাতাস

চোরাকারবারিদের ধরতে গিয়ে বিজিবি সদস্য নিহত

ধর্ষণের শিকার শিশুর ৯৭% ছবি-ভিডিও সরানো হয়েছে : বিটিআরসি

১০

খাল অবৈধ বাঁধমুক্ত করল স্থানীয়রা

১১

ইসরায়েলের প্রতি বিতৃষ্ণা, ফিলিস্তিন প্রেম বাড়ছে যুক্তরাষ্ট্রে

১২

পুরুষের মাথায় বাড়ি দিয়ে হোলি উদযাপন

১৩

শাহবাগ নিয়ে হাসনাতের স্ট্যাটাস

১৪

দিন-দুপুরে সোনার বিপণিবিতানে ডাকাতি, ভিডিও ভাইরাল

১৫

১২ মার্চ : ইতিহাসের এই দিনে যা ঘটেছিল

১৬

১২ মার্চ : আজকের নামাজের সময়সূচি

১৭

‘রাজনৈতিক সংস্কৃতি পরিবর্তন না হলে হাজারো সংস্কারে লাভ নেই’ 

১৮

মধ্যরাতে বরিশাল মহাসড়কে ঝরল দুই প্রাণ

১৯

মহাখালীর সাততলা বস্তির আগুন নিয়ন্ত্রণে

২০
X