আরও তিন জিম্মিতে মুক্তির ঘোষণা দিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হামাস। তবে এজন্য শর্তারোপ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকলে শনিবার আরও তিন জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হতে পারে।
বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম চ্যানেল ১২-এর বরাতে টাইমস অব ইসরায়েলের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
চ্যানেল ১২ জানিয়েছে, জিম্মি মুক্তি ও যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাস্তবায়িত হলে শনিবার হামাস আরও তিনজন জিম্মিকে মুক্তি দিতে পারে। তবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে হলে জিম্মিদের সকলকে মুক্তি দিতে হবে।
সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ইসরায়েল চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করেছে বলে অভিযোগ করেছে হামাস। এর ফলে যুদ্ধবিরতি নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে কঠোর বার্তা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শনিবার দুপুরের মধ্যে সব ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি না দিলে গাজায় ‘নরক’ শুরু করা উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি। ট্রাম্পের সঙ্গে সুর মেলান ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তিনি সম্ভাব্য হামলার প্রস্তুতি নিতে তার সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন।
হামাসের জিম্মি স্থগিতের সিদ্ধান্তে গাজায় যখন আবারও হামলার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে তখন গোষ্ঠীটি বলছে, গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেঙে পড়ার ব্যাপারে আমরা আগ্রহী নই। আমরা এর বাস্তবায়ন এবং দখলদার (ইসরায়েল) যাতে এটি সম্পূর্ণরূপে মেনে চলে তা নিশ্চিত করতে আগ্রহী। হামাসের মুখপাত্র আবদেল লতিফ আল কানৌয়া এসব বলেছেন।
তিনি আরও বলেন, ট্রাম্প এবং নেতানিয়াহু যে হুমকি-ভীতি প্রদর্শনের ভাষা ব্যবহার করেছেন তা যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাস্তবায়নে সহায়ক নয়।
এদিকে গাজা উপত্যকায় আবারও ভয়াবহ সংঘাতের শঙ্কা তৈরি হয়েছে। ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে চলমান উত্তেজনা নতুন করে সংঘর্ষের দিকে মোড় নিতে পারে। ইসরায়েল রিজার্ভ সেনা প্রস্তুত করেছে। এর মাধ্যমে তারা যুদ্ধ শুরুর প্রস্তুতি নিচ্ছে। হামাস যদি আগামী শনিবারের (১৫ ফেব্রুয়ারি) মধ্যে তিন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি না দেয়, তাহলে ইসরায়েল গাজায় আবার হামলা শুরু করবে—এমনই হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি এখন এমন জায়গায় দাঁড়িয়ে, যে কোনো মুহূর্তে সংঘর্ষ ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে।
গাজায় ১৫ মাস ধরে চলা এই সংঘাতে পুরো এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। সেখানকার অধিকাংশ মানুষ বাস্তুচ্যুত, ঘরবাড়ি হারিয়েছে। খাবার, পানির সংকট তো রয়েছেই, আশ্রয়কেন্দ্রেরও অভাব। এমন অবস্থায় আবার যুদ্ধ শুরু হলে গাজার বাসিন্দাদের জীবন আরও কঠিন হয়ে যাবে।
মন্তব্য করুন