মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাজা উপত্যকা নিয়ে নতুন পরিকল্পনার বিরুদ্ধে অবস্থান নিল সিরিয়া।
সিরিয়ার অন্তর্বর্তী সরকারের নতুন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা, সম্প্রতি ব্রিটেনের পডকাস্ট ‘দ্য রেস্ট ইজ পলিটিক্স’-এ এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্পের প্রস্তাবকে ‘গুরুতর অপরাধ’ বলে উল্লেখ করেছেন। হায়াত তাহরির আল-শাম বিদ্রোহী গোষ্ঠীর এ নেতা বলেন, এটি এমন একটি পরিকল্পনা যা শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হবে।
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
সাক্ষাৎকারে আল-শারা বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন যে ফিলিস্তিনিদের নিজ ভূখণ্ড থেকে তাড়ানো সম্ভব নয়।
প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা যিনি একসময় আল-কায়েদার সঙ্গে সম্পর্কিত গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামের নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি বলেন, কোনো শক্তিই ফিলিস্তিনিদের তাদের জমি থেকে সরাতে পারবে না। বহু দেশ এ চেষ্টা করেছে এবং তারা ব্যর্থ হয়েছে, বিশেষত গত দেড় বছর ধরে গাজায় সংঘটিত যুদ্ধের পরও।
প্রসঙ্গত, ডোনাল্ড ট্রাম্প গত সপ্তাহে গাজা উপত্যকায় একটি নতুন পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ নেবে এবং ফিলিস্তিনিদের অন্য কোথাও পুনর্বাসিত করা হবে। ট্রাম্পের প্রস্তাব অনুযায়ী, ফিলিস্তিনিদের গাজায় ফিরে যাওয়ার অধিকার থাকবে না, যা ফিলিস্তিনিদের জন্য একটি বড় আঘাত হতে পারে।
এ বিষয়ে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আল-শারা বলেন, এটি রাজনৈতিক এবং নৈতিকভাবে সঠিক নয় যে ট্রাম্প এমন একটি পদক্ষেপ নেবেন, যা ফিলিস্তিনিদের তাদের প্রাচীন ভূখণ্ড থেকে বিতাড়িত করতে চায়।
তিনি আরও বলেন, ৮০ বছরের বেশি সময় ধরে চলা এই সংঘাতে ফিলিস্তিনিদের স্থানচ্যুত করার সব প্রচেষ্টাই ব্যর্থ হয়েছে। যারা তাদের জন্মভূমি ছেড়ে চলে গিয়েছিল, তারা তাদের সিদ্ধান্তে আফসোস করেছে। ফিলিস্তিনিদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা হচ্ছে তাদের জমি ধরে রাখা।
এদিকে, মিসর, জর্ডান এবং অন্য আরব দেশগুলো ট্রাম্পের পরিকল্পনা বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা মনে করছে, ফিলিস্তিনিদের গাজা থেকে সরিয়ে দেওয়ার যে কোনো প্রচেষ্টা ইসরায়েল-ফিলিস্তিন দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের সম্ভাবনাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে এবং এ পদক্ষেপের ফলে আরব বিশ্বের জন্য গভীর রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি হতে পারে।
আল-শারা বলেন, ফিলিস্তিনিরা তাদের ভূখণ্ডে থাকার অধিকার সুরক্ষিত করতে কঠোর সংগ্রাম করেছে এবং তারা কখনো তাদের ভূমি ছাড়বে না। এ ধরনের পরিকল্পনা আন্তর্জাতিক আইন এবং মানবাধিকারেরও পরিপন্থি।
সিরিয়ার প্রেসিডেন্টের এই বক্তব্য ফিলিস্তিনিদের প্রতি এক দৃঢ় সমর্থন হিসেবে দেখা হচ্ছে, যেখানে সিরিয়া, মিসর, জর্ডান এবং অন্যান্য আরব দেশ ট্রাম্পের গাজা পরিকল্পনার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে।
মন্তব্য করুন