গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করায় ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস তাদের হাতে আটক ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি ‘অনির্দিষ্টকাল’ জন্য স্থগিত করেছে।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) হামাসের পক্ষ থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
প্রতিবেদনে হামাসের মুখপাত্র আবু উবাইদা এক বিবৃতিতে বলেন, গত তিন সপ্তাহে, হামাসের প্রতিরোধ বাহিনী শত্রুদের (ইসরায়েল) চুক্তি লঙ্ঘন দেখতে পেয়েছে। তারা চুক্তির শর্তগুলো বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়েছে।
যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘনের মধ্যে অন্যতম ছিল, বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের উত্তর গাজায় ফিরিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে দেরি করা এবং বিভিন্ন জায়গায় তাদের ওপর গোলাবর্ষণ ও গুলি চালানো। এ ছাড়া গাজার জন্য মানবিক সাহায্য পাঠানোর শর্তও তারা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, অন্যদিকে, গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসসহ প্রতিরোধ বাহিনী তাদের সব প্রতিশ্রুতি পুরোপুরি রক্ষা করেছে।
হামাসের মুখপাত্র বলেন, আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি, শনিবার যে সময়টিতে ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার কথা ছিল, তা এখন স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এটি কার্যকর থাকবে। তিনি আরও জানান, যতদিন না দখলদার ইসরায়েল চুক্তির শর্ত পূর্ণভাবে মেনে চলে, ততদিন হামাস এই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে প্রস্তুত থাকবে।
এদিকে হামাসের এই ঘোষণার পর, ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ হামাসের সিদ্ধান্তকে যুদ্ধবিরতির স্পষ্ট লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছেন।
তিনি বলেছেন, হামাসের জিম্মিদের মুক্তি স্থগিত করার ঘোষণা যুদ্ধবিরতির সঠিক লঙ্ঘন। আমি ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্সকে (আইডিএফ) যে কোনো পরিস্থিতির জন্য সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে থাকার নির্দেশ দিয়েছি। আমরা আর একবার ৭ অক্টোবরের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে দেব না।
এদিকে হামাসের এই সিদ্ধান্ত ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তির তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে এবং পরবর্তী পদক্ষেপগুলো সম্পর্কে সংশয় সৃষ্টি করেছে। হামাস দাবি করেছে, চুক্তি অনুযায়ী ইসরায়েল তাদের দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হয়েছে এবং এর জন্য দখলদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এখন শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির সম্ভাবনা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে এবং যুদ্ধবিরতি চুক্তির ভবিষ্যৎ নিয়ে বড় প্রশ্ন উঠেছে।
মন্তব্য করুন