ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চলকে দক্ষিণ গাজা থেকে বিভক্তকারী নেতজারিম করিডোর থেকে নিজেদের সেনা প্রত্যাহার করে নিয়েছে ইসরায়েল। ইসরায়েলি সেনাদের প্রত্যাহারের ফলে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি গাড়িতে করে মালামালসহ উত্তর গাজায় ফিরতে শুরু করেছেন।
রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ১৯ জানুয়ারি হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে স্বাক্ষরিত যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় গাজা উপত্যকার নেতজারিম করিডোর থেকে ইসরায়েলি সৈন্যদের প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ চুক্তির ফলে এখন পর্যন্ত ২১ ইসরায়েলি জিম্মি ও ৫৬৬ ফিলিস্তিনি বন্দি মুক্তি পেয়েছেন।
প্রসঙ্গত, তিন সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম পর্যায়ের শেষে ৩৩ ইসরায়েলি জিম্মি ও এক হাজার ৯০০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার আশা করা হচ্ছে। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হামাসের হাতে বন্দি থাকা ৩৩ ইসরায়েলির মধ্যে অন্তত আটজন নিহত হয়েছেন।
২০২৩ সালের অক্টোবরে হামাসের শতাধিক যোদ্ধা ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে হামলা চালিয়ে এক হাজার ২০০ জনকে হত্যা করে এবং ২৫১ জনকে ধরে নিয়ে গাজায় জিম্মি করে। এর পরপরই ইসরায়েল গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে।
গাজার হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, ১৫ মাসের বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধে ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত ৪৮ হাজার ১৮৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এছাড়া হাজার হাজার মানুষ আহত হয়েছেন। জাতিসংঘ জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় গাজার দুই-তৃতীয়াংশ ভবন ধ্বংস অথবা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
যুদ্ধের শুরুর দিকে ইসরায়েলি হামলার মুখে উত্তর গাজার প্রায় ৭ লাখ বাসিন্দা দক্ষিণ গাজায় পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। ওই অঞ্চলে স্থল অভিযান শুরুর আগে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী তাদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। পরবর্তীতে দক্ষিণ গাজাতেও হামলা চালানো হলে অনেক ফিলিস্তিনিকে একাধিকবার স্থান পরিবর্তন করতে হয়।
গাজা-ইসরায়েল সীমান্ত থেকে ভূমধ্যসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত নেতজারিম করিডোর উত্তর ও দক্ষিণ গাজাকে বিভক্ত করে রেখেছিল। সেখানে ইসরায়েলি সেনাদের উপস্থিতির কারণে বহু ফিলিস্তিনি তাদের বাড়িঘরে ফিরতে পারছিলেন না।
ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী করিডোরের পূর্ব অংশ থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করেনি। তবে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নেতজারিম করিডোর থেকে সেনা প্রত্যাহার করায় গাজা সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ দুর্বল হয়ে যেতে পারে ইসরায়েলের জন্য।
মন্তব্য করুন