অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান শুরু করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। দেশটিতে অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হচ্ছে। এ সময় গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের গণহারে ফেরত পাঠানো হচ্ছে।
সোমবার (০৩ ফেব্রুয়ারি) খালিজ টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছরের ৩১ ডিসেম্বরে দেশটিতে সাধারণ ক্ষমার মেয়াদ শেষ হয়েছে। এরপর থেকে মাসব্যাপী অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হয়েছে। এ সময় অন্তত ছয় হাজার জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দেশটির একজন শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, অমিরাতে গত এক মাসে ২৭০টির বেশি অভিযান চালানো হয়েছে।
খালিজ টাইমস জানিয়েছে, নিরাপদ সমাজ বিনির্মাণ শীর্ষক শিরোনামে জানুয়ারি থেকে এ অভিযান চালানো হয়েছে। এ অভিযানে গ্রেপ্তার অবৈধ অভিবাসীদের ৯৩ শতাংশকে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
ফেডারেল অথরিটি ফর আইডেন্টিটি, সিটিজেনশিপ, কাস্টমস অ্যান্ড পোর্ট সিকিউরিটির (আইসিপি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সুহাইল সাঈদ আল খৈলি বলেন, অভিযান অব্যাহত থাকবে, ফলে জনসাধারণকে এই ধরনের আইন অমান্যকারীদের হালকাভাবে না নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি।
অবৈধ অভিবাসীদের জন্য অথবা ভিসা নবায়নকে আরও নির্বিঘ্ন করার জন্য নতুন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এমন কোনো পদক্ষেপের প্রয়োজন হবে না। কেননা ইতোমধ্যেই পর্যাপ্ত এবং নবায়ন প্রক্রিয়াগুলো সহজ ও বাস্তবসম্মত করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছরের ১ থেকে ৩১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আমিরাতে চার মাসের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা হয়। এ সময়ে অবৈধ অভিবাসীদের পুনঃপ্রবেশের নিষেধাজ্ঞা ছাড়াই দেশত্যাগ করার অথবা ইকামা তথা নতুন চুক্তির মাধ্যমে কাজ নিশ্চিতের সুযোগ দেওয়া হয়।
তিনি বলেন, এ উদ্যোগের ফলে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ব্যক্তি তাদের কাগজপত্র সংশোধন করেছেন। অবশিষ্ট অবৈধ অভিবাসীদের শনাক্ত এবং তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কর্তৃপক্ষ দেশব্যাপী পরিদর্শন অভিযান জোরদার করেছে।
আইসিপির পরিচয় ও পররাষ্ট্রবিষয়ক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইদ সালেশ আল সামছি বলেন, সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থার সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে অভিযান চালনো হচ্ছে। তিনি জানান, অভিযানে আইন অমান্যকারীদের পাশাপাশি যারা তাদের আশ্রয় দিয়েছে বা নিয়োগ করেছে তাদের উপর আইনি ব্যবস্থা এবং জরিমানা আরোপ করা হয়েছে। লঙ্ঘনকারীদের এবং তাদের অবৈধভাবে থাকার ব্যবস্থাকারীদের প্রতি জিরো টলারেন্স নীতির কথা জানান তিনি।
আমিরাতের আইনানুসারে, বসবাসের আইন লঙ্ঘনে সহায়তা, সুবিধা দেওয়া বা জড়িত কোনো ব্যক্তিকে কারাদণ্ডের পাশাপাশি কমপক্ষে ১০ হাজার দিরহাম জরিমানা করা হবে।
তিনি বলেন, যদি কোনো ব্যক্তি তার অফিসিয়াল স্পন্সর না হয়েও কোনো লঙ্ঘনকারীকে নিয়োগ করেন, তাহলে ৫০ হাজার দিরহাম জরিমানা করা হবে। আর কোনো ব্যক্তি তার মনোনীত স্পন্সর ছাড়া অন্য কোথাও কাজ করতে ধরা পড়েন, তাহলে তাকে আটক করা হবে এবং আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর মধ্যে কারাদণ্ড, নির্বাসন এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে পুনরায় প্রবেশের উপর স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
মন্তব্য করুন