সিরিয়ার অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা তার প্রথম বিদেশ সফরে রোববার (০২ ফেব্রুয়ারি) সৌদি আরবে যাচ্ছেন। এ সফরে তার সফরসঙ্গী হয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদ হাসান আল-শিবানি।
রোববার (০২ ফেব্রুয়ারি) সিরিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা সানার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আহমেদ আল-শারা সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে বৈঠক করবেন। রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থার প্রকাশিত ছবিতে দেখা গেছে, প্রেসিডেন্ট শারা ও তার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সৌদির উদ্দেশ্যে বিমানে যাত্রা শুরু করেছেন।
গত বছরের ৮ ডিসেম্বর সিরিয়ার স্বৈরশাসক বাসার আল-আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করে ইসলামপন্থি দল হায়াত তাহরির আল-শাম। এরপর দলটির প্রধান নেতা আহমেদ আল-শারা ক্ষমতা গ্রহণ করেন। দুই মাস পর, আনুষ্ঠানিকভাবে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন তিনি। নতুন সিরিয়ার সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করার এই সফরকে কূটনৈতিকভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারি সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী দামেস্ক সফর করেন। সে সময় তিনি বলেন, সিরিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। নিষেধাজ্ঞার কারণে সিরিয়ার অর্থনীতি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
প্রসঙ্গত, বাশার আল-আসাদ পরিবার সিরিয়ায় দীর্ঘ ৫০ বছর শাসন করেছে। ২০১১ সালে তার বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু হলে তিনি কঠোরভাবে তা দমন করার চেষ্টা করেন। এরপর সিরিয়ায় শুরু হয় গৃহযুদ্ধ, যা কয়েক লাখ মানুষের প্রাণ কেড়ে নেয় এবং লাখ লাখ মানুষকে বাস্তুহারা করে। তবে, আহমেদ আল-শারার নেতৃত্বে ইসলামপন্থিগোষ্ঠী ক্ষমতা দখলের পর দেশটিতে গৃহযুদ্ধ থেমে যায়।
এদিকে সাধারণ মানুষের ওপর কঠোর নির্যাতনের অভিযোগে সিরিয়ার ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে পশ্চিমা দেশগুলো। এতে দেশটির অর্থনীতি ভয়াবহ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এখন এসব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্য পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে সচেষ্ট হয়েছেন আহমেদ আল-শারা।
উল্লেখ্য, ঐতিহাসিকভাবে আরব দেশগুলো সিরিয়ার ক্যাপ্টাগন উৎপাদন ও বাণিজ্য নিয়ে উদ্বিগ্ন। ক্যাপ্টাগন এক ধরনের অ্যামফেটামিন জাতীয় মাদক, যা উপসাগরীয় দেশগুলোর মাদকাসক্ত পার্টিপ্রেমী ও শ্রমিকদের মধ্যে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। পশ্চিমা মাদকবিরোধী কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সিরিয়ায় দীর্ঘদিন ধরে ক্যাপ্টাগনের বৃহৎ উৎপাদন চলে আসছে এবং জর্ডান এটি উপসাগরীয় দেশগুলোতে পাচারের অন্যতম প্রধান ট্রানজিট রুট।
এ বিষয়ে সিরিয়ার নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদ হাসান আল-শিবানি ৭ জানুয়ারি তার জর্ডানের প্রতিপক্ষকে আশ্বস্ত করে বলেন, সিরিয়ার নতুন ইসলামপন্থি শাসকদের অধীনে মাদক চোরাচালান জর্ডানের জন্য কোনো হুমকি সৃষ্টি করবে না।
মন্তব্য করুন