দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার ইসরায়েলপ্রীতি দেখাতে শুরু করেছেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) সাজাপ্রাপ্ত আসামি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে হোয়াইট হাউসে আমন্ত্রণ জানানো তার একটি উদাহরণ। নেতানিয়াহু গত বছর আইসিসির গ্রেপ্তারি পরোয়ানায় ছিলেন। ট্রাম্পের আমন্ত্রণে আগামী মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) যুক্তরাষ্ট্র সফর করবেন। এর মাধ্যমে ট্রাম্প আইসিসির কর্তৃত্বকে কার্যত অগ্রাহ্য করেছেন।
এই পরিস্থিতির মধ্যে, ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হয়েছে। এ চুক্তিতে ট্রাম্পের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তবে যুদ্ধবিরতির এই পরিস্থিতি নিয়ে কিছুটা সংশয়ও দেখা দিয়েছে। ট্রাম্পের গাজানীতি যেন ইসরায়েলের দিকেই ঝুঁকছে, যা গাজার পুনর্গঠন এবং সেখানে শান্তির সম্ভাবনা নিয়ে নতুন সংকট সৃষ্টি করতে পারে।
ট্রাম্পের দাবি, তিনি গাজা থেকে বাস্তুচ্যুত মানুষদের আশ্রয় দিতে এবং গাজা খালি করতে জর্ডান ও মিসরের কাছে অনুরোধ করেছেন। তার মতে, গাজার মানুষকে অন্য দেশে পাঠানো যেতে পারে এবং গাজাবাসী সেখানে শান্তিতে থাকতে পারবে। যদিও জর্ডান ও মিসর এ ধরনের উদ্যোগে সম্মত হয়নি। দেশ দুটির পক্ষ থেকে ট্রাম্পের পরিকল্পনাকে সরাসরি প্রত্যাখান করা হয়েছে।
বিশ্বের আরব দেশগুলো, বিশেষত মিসর, জর্ডান ও অন্য আরব রাষ্ট্রগুলো ট্রাম্পের এই পরিকল্পনাকে একটি ভয়াবহ সিদ্ধান্ত হিসেবে দেখছে। তাদের মতে, এটি গাজার মানুষদের নতুন করে বাস্তুচ্যুত করার প্রক্রিয়া শুরু করবে। গাজা খালি করে সেখানে পুনর্গঠন কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব নয়। এই পরিস্থিতি একদিকে যেমন যুদ্ধবিরতির স্থায়িত্বের জন্য হুমকি সৃষ্টি করছে, তেমনি আবার ফিলিস্তিনিদের জন্য শান্তির কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।
এছাড়া, ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্তে ইসরায়েল সরকারও সমর্থন দিয়েছে। তাদের মতে, গাজায় অবৈধ বসতি স্থাপনকারীদের বসবাস করতে দেওয়া উচিত। তবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বিশেষ করে ইউরোপীয় মিত্ররা এ ধরনের সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ। জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজ এর প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এর ফলে নতুন একটি মানবিক সংকট তৈরি হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন তিনি।
এদিকে বাইডেন প্রশাসন ইসরায়েলকে দুই হাজার পাউন্ডের বোমা সরবরাহের সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছিল। কিন্তু ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করেছেন। তার এ সিদ্ধান্ত ইসরায়েলকে শক্তি জোগাবে এবং হামাস ও ইরান সমর্থিত গোষ্ঠী থেকে রক্ষা করতে সহায়ক হবে। এতে গাজার পরিস্থিতি আরও অস্থিতিশীল করতে পারে।
মন্তব্য করুন