মার্কিন মুলুকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিষেকের সঙ্গে সঙ্গেই মধ্যপ্রাচ্যে বেজে উঠতে পারে যুদ্ধের দামামা। কিন্তু তার আগে থেকেই প্রক্সিযুদ্ধের খেলা চালিয়ে যাচ্ছে ইরান। ইয়েমেনে বিদ্রোহীদের হাতে তুলে দিয়েছে নিজের মিসাইল। আর সেই মিসাইল দিয়েই ইসরায়েলে হামলা করছে ইয়েমেন। দেশটি আরব উপদ্বীপে এক প্রান্তে হওয়ায় কৌশলগতভাবে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে। আবার সৌদি আরবও হয়ে উঠেছে দেশটির জন্য প্রাচীর।
কিন্তু ইয়েমেনকে বাগে আনতে না পারলে ইসরায়েল শান্তিতে থাকতে পারবে না। ইরান সামরিক শক্তিধর হওয়ায় দেশটির সঙ্গে ইসরায়েলের সরাসরি যুদ্ধের সম্ভাবনা খুবই কম। আবার ইরান যুদ্ধে জড়িয়ে পড়লে মধ্যপ্রাচ্য যেমন আগুনের গোলা হয়ে উঠবে, তেমনি সেই যুদ্ধে অন্য পরাশক্তিরাও জড়িয়ে পড়তে পারে। এবার সেই ভাবনা থেকেই ইয়েমেনের প্রত্যন্ত একটি দ্বীপে রানওয়ে বানানো হচ্ছে। স্যাটেলাইট ইমেজে দেখা যায়, ওই রানওয়ের কাজ প্রায় সম্পন্ন হয়ে গেছে।
বার্তা সংস্থা এপি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ভারত মহাসাগরের বুক চিড়ে ভেসে ওঠা আব্দ আল-কুরসি দ্বীপে এই রানওয়ে বানানো হচ্ছে। এই দ্বীপটি গালফ অব এডেনের একেবারে মুখে দাঁড়িয়ে। এই উপসাগর ঘিরেই বিশ্বের সব দেশকে রীতিমতো নাকানি-চুবানি খাওয়াচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের গরিব দেশ ইয়েমেন। তবে এই রানওয়ের কাজ শেষ হলে, সেখানে সামরিক বিমান অবতরণ করতে পারবে।
এর ফলে গালফ অব এডেন ও লোহিত সাগর হয়ে চলাচলকারী জাহাজের সুরক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। পাশাপাশি ইরানের অস্ত্র চোরাচালানও কমে যাবে। কারণ বিশ্লেষকদের মতে, এই অঞ্চল দিয়েই অস্ত্র চোরাচালান করে থাকে ইরান। ধারণা করা হচ্ছে, এই রানওয়ে নির্মাণ করছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। গেল ৭ জানুয়ারি প্লানেট ল্যাবস পিবিসি ওই ছবি তুলেছিল। সেখানে দেখা যায়, প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ওই রানওয়ে সর্বোচ্চ পয়েন্ট প্রায় ৫ কিলোমিটার প্রশস্ত।
অবশ্য রানওয়ের দৈর্ঘ্য দেখে বিশ্লেষকদের ধারণা, এখানে বড় কোনো বাণিজ্যিক বিমান বা ভারী বোমারু বিমান অবতরণ করতে পারবে না। তবে কৌশলগত কারণে আব্দ আল-কুরি দ্বীপের গুরুত্ব অনেক। এই দ্বীপটির অবস্থান আফ্রিকা থেকে মাত্র ৯৫ কিলোমিটার দূরে। আর এ কারণেই স্নায়ুযুদ্ধের সময় এখানে যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করে রেখেছিল সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন। এখন এই দ্বীপ ঘিরেই নতুন পরিকল্পনা করছে সংযুক্ত আরব আমিরাত।
মন্তব্য করুন