গাজায় অবশেষে কার্যকর হয়েছে যুদ্ধবিরতি চুক্তি। প্রায় তিন ঘণ্টা বিলম্বের পর স্থানীয় সময় রোববার (১৯ জানুয়ারি) বেলা সোয়া ১১টায় হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।
রোববার সকাল সাড়ে ৮টায় যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার কথা থাকলেও নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে বলা হয় এখনই যুদ্ধবিরতি শুরু হচ্ছে না। কারণ হিসেবে তারা জানায়, হামাস এখনো শর্তমত মুক্তি দেওয়া হবে এমন জিম্মি ব্যক্তিদের তালিকা প্রকাশ করেনি।
হামাসের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘কারিগরি সমস্যার’ কারণে মুক্তি পেতে যাওয়া জিম্মি ব্যক্তিদের তালিকা প্রকাশ করতে দেরি হচ্ছে। তবে ইসরায়েল জানায়, ‘যতক্ষণ না হামাসের পক্ষ থেকে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী মুক্তি দিতে যাওয়া জিম্মি ব্যক্তিদের তালিকা দেওয়া হবে, ততক্ষণ যুদ্ধবিরতি কার্যকর করা হবে না।’
সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, তিন নারী জিম্মির নাম প্রকাশ করেছে হামাস। তারা নিশ্চিত করেছে, যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে এই তিন নারী সবার প্রথমে মুক্তি পাবেন। তারা হলেন রোমি গোনেন, এমিলি দামানি এবং দোরোন স্টেনব্রিচার।
ইসরায়েলও নিশ্চিত করেছে, চুক্তির অংশ হিসেবে প্রথমে ধাপে মুক্তি দেওয়া হবে এমন তিন জিম্মি নারীর তালিকা তারা পেয়েছে। এরপরেই সকাল ১১টায় যুদ্ধবিরতি কার্যকরের ঘোষণা দেয় ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।
গতকাল শনিবার গাজায় যুদ্ধবিরতির চুক্তি অনুমোদন দেয় ইসরায়েলের মন্ত্রিসভা। এর মধ্য দিয়ে গাজায় দীর্ঘ ১৫ মাস ধরে চলা রক্তক্ষয়ের অবসান হওয়ার পথ খুলছে বলে আশা করা হচ্ছে। তিন ধাপে কার্যকর করার কথা রয়েছে এ চুক্তি। এর মধ্যে প্রথম ধাপ হবে ৪২ দিনের।
গাজার এই যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী, প্রথম ধাপে, তিনজন ইসরায়েলি জিম্মির মুক্তির বিনিময়ে ৭৩৭ জন ফিলিস্তিনি বন্দি মুক্তি পাবে, যাদের বেশিরভাগই ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি ছিলেন।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নেতৃত্বে ইসরায়েলে হামলা চালিয়ে ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়েছিল। যুদ্ধবিরতির চুক্তির আওতায় প্রথম পর্যায়ে ৩৩ জন ইসরায়েলি জিম্মি মুক্তি পাবেন।
এদিকে এই যুদ্ধবিরতির চুক্তি কাতার, যুক্তরাষ্ট্র ও মিসরের মধ্যস্থতায় সম্পাদিত হয়েছে। গত ১৫ মাসের যুদ্ধের পর গাজায় প্রায় ৪৭ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।
মন্তব্য করুন