ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ৪২ দিনের যুদ্ধবিরতিতে ৩৩ ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেবে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি কর্মকর্তারা। কাতারের দোহায় গাজায় যুদ্ধবিরতির মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে যুদ্ধবিরতির চূড়ান্ত খসড়া হামাস ও ইসরায়েলের হাতের পৌঁছানোর পর এ বক্তব্য প্রদান করেন ইসরায়েলি কর্মকর্তারা।
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এ তথ্য জানিয়েছে।
যুদ্ধবিরতির চূড়ান্ত খসড়া নিয়ে ইসরায়েলি কর্মকর্তারা আরও জানিয়েছে, এই যুদ্ধবিরতির প্রথম পর্যায়ে হামাস জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
জিম্মিদের মুক্তি প্রসঙ্গ
এদিকে ইসরায়েলি কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, মুক্তি পেতে যাওয়া জিম্মিদের বেশিরভাগই জীবিত। তবে তাদের মধ্যে কয়েকজনের মরদেহও ইসরায়েলের কাছে হস্তান্তর করবে হামাস। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার সময় ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়েছিল। ধারণা করা হচ্ছে, তাদের মধ্যে এখনো ৯৪ জন বন্দি রয়েছেন, আর এদের মধ্যে অন্তত ৩৪ জন নিহত হয়েছেন।
যুদ্ধবিরতির উদ্দেশ্য এবং প্রস্তুতি
ইসরায়েলি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিষয়ে তারা বেশ আশাবাদী। চুক্তি অনুযায়ী, উত্তর গাজার বাসিন্দারা তাদের এলাকায় ফিরে যেতে পারবেন। তবে ইসরায়েল যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে বলে জানানো হয়েছে।
চুক্তির শর্তাবলী
ইসরায়েলি সেনারা মিশর-গাজা সীমান্তে ফিলাডেলফি করিডরে সামরিক উপস্থিতি বজায় রাখবে। ইসরায়েল গাজা উপত্যকার মধ্যে একটি বাফার জোন তৈরি করবে। ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি থাকা নির্দোষ ফিলিস্তিনিদের মুক্তি দেওয়া হবে। তবে যাদের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে, তাদের গাজা বা অন্য কোনো দেশে মুক্তি দেওয়া হতে পারে।
চুক্তির সম্ভাবনা এবং বাধা
দোহায় চুক্তির বিষয়ে চলমান আলোচনা খুব শিগগিরই চূড়ান্ত হতে পারে। তবে চুক্তি বাস্তবায়নের আগে ইসরায়েলের নিরাপত্তা ক্যাবিনেট ও সরকারের অনুমোদন প্রয়োজন। আরব কর্মকর্তারাও আশাবাদী যে উভয় পক্ষের সম্মতিতে শিগগিরই চুক্তি সম্পন্ন হবে।
৭ অক্টোবরের হামলা এবং পরবর্তী পরিস্থিতি
৭ অক্টোবরের হামলায় এক হাজার ২০০ ইসরায়েলি নিহত হন এবং ২৫০ জনকে জিম্মি করা হয়। সেই থেকে গাজায় ইসরায়েলের পাল্টা হামলা চলছে। এখন পর্যন্ত এই হামলায় ৪৬ হাজার ৬০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। আহত হয়েছেন আরও ১ লাখেরও বেশি মানুষ।
এই যুদ্ধবিরতি চুক্তি দীর্ঘমেয়াদি সংঘাতের অবসান ঘটাতে এবং ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য মানবিক সহায়তা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
মন্তব্য করুন