দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতাগ্রহণের পরই ইরানের ওপর চড়াও হবেন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এমন আশঙ্কা বিশ্লেষকদের। কারণ, তেহরানের পরমাণু প্রকল্প নিয়ে ইসরায়েলের মতোই সমানভাবে উদ্বিগ্ন এই রিপাবলিকান নেতা। আগের মেয়াদে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে বিশ্বের শক্তিশালী ৬টি দেশ যে চুক্তি করেছিল, সেখান থেকে বের হয়ে যান ট্রাম্প।
চুক্তিটির অধীনে নিজেদের পরমাণু সক্ষমতা সীমিত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল খামেনির দেশ। বিনিময়ে ইরানের ওপর থেকে বেশকিছু নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয় যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা। কিন্তু ট্রাম্প সেই চুক্তি থেকে বের হয়ে যাওয়ায় তেহরান আবারও বেঁধে দেওয়া মাত্রার চেয়ে বেশি হারে ইউরোনিয়াম মজুত করছে।
ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এসে দেশটির ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে ইউরোপের ৩টি শক্তিধর দেশের সাথে পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে আলোচনায় বসছে মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনীতির গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়- ইরান। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএপি।
প্রতিবেদনে বলা হয়- ইউরোপীয় তিন পরাশক্তি ফ্রান্স, ব্রিটেন এবং জার্মানির সাথে পারমাণু কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা করবে ইরান। নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব গ্রহণের ঠিক এক সপ্তাহ আগে এ আলোচনা হতে চলেছে। সোমবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায় বার্তা সংস্থাটি।
এএফপি জানিয়েছে, সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় গেল বছরের নভেম্বরে তেহরান এবং ই-৩ নামে পরিচিত তিনটি ইউরোপীয় শক্তিধর দেশের মধ্যে বৈঠক হয়। ফলপ্রসূ ওই বৈঠকের দুই মাসেরও কম সময়ের মধ্যে স্থানীয় সময় সোমবার দ্বিতীয় দফায় আলোচনায় বসতে যাচ্ছে তারা।
তবে, আলোচনার বিষয়ে জার্মানির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, এগুলো কোনো আলোচনা নয়। অন্যদিকে ইরানও একইভাবে জোর দিয়ে বলেছে, এ আলোচনা কেবলই শলা-পরামর্শ। এর আগে, গেল সপ্তাহে ফরাসি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ই-৩ দেশগুলো ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির বিষয়ে একটি কূটনৈতিক সমাধানের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে, এ বৈঠকটি তারই ইঙ্গিত। তবে এর অগ্রগতি অত্যন্ত সমস্যাযুক্ত।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ২০১৫ সালে ইরানের সাথে বৈঠকের বিষয়ে আন্তরিক ছিল ইউরোপীয় দেশগুলো। তবে, সম্প্রতি ইসরায়েলের সঙ্গে সরাসরি পাল্টাপাল্টি হামলায় জড়িয়েছে তেহরান। এতে পশ্চিমা দেশগুলোর অনাস্থা কুড়িয়েছে খামেনির দেশ। ফলে, ট্রাম্প যদি ইরানের প্রতি কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেন, সেখানে ইউরোপীয় দেশগুলো হয়তো দ্বিমত করবে না।
এমনটি ঘটলে অবধারিতভাবেই নাজুক পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হবে উপসাগরীয় দেশটিকে। যদিও এ ধরনের চাপ ইরানের জন্য নতুন কোনো বিষয় নয় বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
মন্তব্য করুন