সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে মাটির নিচে ক্ষেপণাস্ত্রের শহর গড়ে তুলেছে ইরান। সম্প্রতি এর ভিডিও প্রকাশ করেছে দেশটি। এতে উদ্বেগে পড়েছে তেহরানের চিরশত্রু ইসরায়েল। কারণ, দশকের পর দশক ইরানের সঙ্গে ছায়াযুদ্ধ লিপ্ত তেল আবিব।
সম্প্রতি ছায়াযুদ্ধের খোলস ছেড়ে একে অপরের ভূখণ্ডে সরাসরি হামলা ও পাল্টা হামলা চালাচ্ছে দেশ দুটি। উত্তেজনাকর এমন পরিস্থতির মধ্যেই ক্ষেপণাস্ত্রের শহরের ভিডিও প্রকাশ করল খামেনির দেশ।
প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়—ভূগর্ভস্থ শহরটির দুই পাশে থরে থরে সাজানো বিভিন্ন পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র। এর মাঝখানে সিনেমাটিক ওয়েতে সামরিক গাড়ি নিয়ে প্রবেশ করছেন ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোর-আইআরজিসি কমান্ডার মেজর জেনারেল হোসেইন সালামি ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমির আলী হাজিজাদেহ।
ইরানের সংবাদমাধ্যম মেহের নিউজ জানিয়েছে—অনেক আগেই এই ক্ষেপণাস্ত্রের শহর নির্মাণ করা হয়েছে। গত অক্টোবর ও এপ্রিলে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইরান যে অভিযান চালিয়েছে, তার একাংশ পরিচালিত হয়েছে ভূগর্ভস্থ এ ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটি ব্যবহার করে।
এখানে কী কী ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে, সেগুলো কোন পাল্লার, সেই সম্পর্কে কোনো তথ্য দেয়নি তেহরান। তবে গত শুক্রবার ইরানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর আবাদানে এক অনুষ্ঠানে সালামি ঘোষণা করেন—আইআরজিসি অ্যারোস্পেস ফোর্স ‘নতুন বিশেষ ক্ষেপণাস্ত্র’ তৈরি করছে। ধারণা করা হচ্ছে, নতুন সেই ক্ষেপণাস্ত্রের মজুত এই ঘাঁটিতেও থাকতে পারে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, গাজা, লেবানন ও ইয়েমেনে ইরান সমর্থিত বাহিনী ইসরায়েলের আক্রমণের মুখে পড়লেও এবং দেশটির মিত্র সিরিয়ার নেতা বাশার আল আসাদ সরকারের পতন ঘটলেও তেহরান এ অঞ্চলে ক্ষমতা হারায়নি, সেটাই দেখাতে চায় উপসাগরীয় দেশটি।
আর মাত্র এক সপ্তাহ পরই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতাগ্রহণ করবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে পা রাখলেই তেহরানের সঙ্গে পশ্চিমের সম্পর্কের সমীকরণ কঠিন হয়ে যাবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। বিশ্লেষকদের ধারণা—ধারণা করা হচ্ছিল—ইরানের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবেন এই রিপাবলিক্যান নেতা। কিন্তু ট্রাম্প কেনো পদক্ষেপ নেওয়ার আগেই ক্ষেপণাস্ত্রের শহরের ভিডিও প্রকাশ করে ট্রাম্প প্রশাসন ও তার ঘনিষ্ঠ মিত্র ইসরায়েলকে উদ্বেগের ফেলে দিল মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি।
মন্তব্য করুন