বন্দুকধারীর হামলায় তিন ইসরায়েলি নিহত এবং আটজন আহত হয়েছেন। ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীরের কাছে কেদুমিমে ইহুদি বসতিতে এ ঘটনা ঘটে। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমকে তথ্যটি জানিয়েছে।
আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, সোমবার (৬ জানুয়ারি) ইসরায়েলি মিডিয়া নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে সংবাদ প্রকাশ করেছে। তাতে বলেছে, অন্তত দুই ফিলিস্তিনি বন্দুকধারী বসতির বাইরে গাড়ি এবং একটি বাসে গুলি চালায়। এরপর তারা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
এ সময় গুলিতে ৭০ বছর বয়সী দুই নারী এবং ৩৫ বছর বয়সী এক পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। তিনি অবৈধ বসতির বাসিন্দা এবং তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন।
গুলি চালানোর পর অতি-ডানপন্থি ইসরায়েলি অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ অধিকৃত পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনি সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক অভিযানের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি সেখানে গাজার অনুরূপ ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘আল-ফান্দুক, নাবলুস এবং জেনিনকে জাবালিয়ার মতো করে দেখতে হবে।’ ইসরায়েলি বাহিনী গাজার জাবালিয়ায় নিয়মিত বিমান হামলা চালিয়ে আসছে। এ ছাড়া সেখানে স্থল অভিযানও চালায় তারা। এতে অঞ্চলটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
এদিকে গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের একটি প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গণহত্যা অব্যাহত রেখেছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর শুরু হওয়া যুদ্ধে ফিলিস্তিনি নিহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৪৫ হাজার ৬০০। যাদের বেশিরভাগ নারী ও শিশু। যদিও ইসরায়েল দাবি করে আসছে, হামাসের সন্ত্রাসী ঘাঁটি লক্ষ্য করে অভিযান চলছে। এতে হামাস যোদ্ধারা নিহত হচ্ছেন। যোদ্ধারা বেসামরিক লোকদের মধ্যে অবস্থান করায় বা তাদের মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করায় হতাহতের সংখ্যা বাড়ছে।
কিন্তু আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বহু প্রমাণ উপস্থাপন করেছে। যেখানে ইসরায়েলি বাহিনী বেসামরিক লোকদের লক্ষ্য করে সুনির্দিষ্ট হামলা চালায়।
প্রসঙ্গত, ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন চলছে এক বছরের বেশি সময় ধরে। এতে এ উপত্যকার প্রায় শতভাগ অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে। স্থানীয়দের মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই। অধিকাংশ ফিলিস্তিনি খোলা আকাশের নিচে ধ্বংসস্তূপের ওপর তাঁবু খাটিয়ে বসবাস করছে।
সে সঙ্গে অধিকৃত পশ্চিম তীরেও ইসরায়েলি বাহিনীর অত্যাচার চলছে। সেখানে ইহুদি বসতি দ্রুত সম্প্রসারণ করছে তারা। এতে বাধা হয়ে যারা দাঁড়াচ্ছে তাদের গ্রেপ্তার করে ইসরায়েলি কারাগারে পাঠানো হচ্ছে। এ তালিকায় আছেন সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী ও সাধারণ বিক্ষোভকারীরা।
মন্তব্য করুন