ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি হামলার বর্বর চিত্র বিশ্বের সামনে তুলে ধরছে আলজাজিরা। এ জন্য ইসরায়েল শুরু থেকে সংবাদমাধ্যমটির ওপর ক্ষুব্ধ। গত বছর জেরুজালেমের অ্যাম্বাসেডর হোটেলে অবস্থিত আলজাজিরার অস্থায়ী অফিসে অভিযানের নামে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে সেই ক্ষোভ মেটান বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। বন্ধ করে দেওয়া হয় ইসরায়েলে আলজাজিরার সম্প্রচার। এবার কাতারভিত্তির আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিল ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষও।
আলজাজিরার সাংবাদিকরা জীবনের মায়া ত্যাগ করে গাজা ও ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি তাণ্ডবের সংবাদ সংগ্রহ অব্যাহত রেখেছেন। এরই মধ্যে সংবাদমাধ্যমটির সম্প্রচার সাময়িকভাবে বন্ধ করল ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ।
আলজাজিরা জানায়, সম্প্রচার সাময়িকভাবে বন্ধ করার আদেশ দিয়েছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। বুধবার (১ জানুয়ারি) আদেশটি জারি করা হয়। অভিযোগ হিসেবে বলা হয়, ফিলিস্তিনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে আলজাজিরা উসকানিমূলক কনটেন্ট বা প্রতিবেদন প্রচার করছে।
সংস্কৃতি, স্বরাষ্ট্র ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে গঠিত বিশেষ মন্ত্রী কমিটির সিদ্ধান্ত মতে, সম্প্রচার বন্ধ রাখাসহ ফিলিস্তিনে এর কার্যালয়ের সব কার্যক্রম স্থগিত রাখতে হবে।
এদিকে অধিকৃত পশ্চিম তীরে আলজাজিরা তার কার্যালয় বন্ধ করার ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের নিন্দা করেছে। এ পদক্ষেপকে ইসরায়েলি দখলদারত্বের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ মনে করে তারা।
বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) কাতার-ভিত্তিক নেটওয়ার্কটি এক বিবৃতিতে বলেছে, আলজাজিরা মিডিয়া নেটওয়ার্ক ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের পশ্চিম তীরে তাদের কাজ এবং কভারেজ স্থগিত করার সিদ্ধান্তের নিন্দা করেছে। এই সিদ্ধান্তকে অধিকৃত অঞ্চলে সংঘটিত দ্রুত ক্রমবর্ধমান ঘটনাগুলো কভার করা থেকে চ্যানেলটিকে নিরুৎসাহিত করার প্রচেষ্টা ছাড়া আর কিছুই বলে মনে করে না আলজাজিরা।
আরও বলা হয়, দুর্ভাগ্যবশত এই ধরনের সিদ্ধান্ত ইসরায়েলি সরকারের গৃহীত পূর্ববর্তী পদক্ষেপের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। দখলদার বাহিনীও রামাল্লায় আলজাজিরার অফিস বন্ধ করে দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত বছরের মে মাসে জেরুজালেমের অ্যাম্বাসেডর হোটেলে অবস্থিত আলজাজিরার অস্থায়ী অফিসে অভিযান চালায় ইসরায়েলি পুলিশ। অভিযানে আল-জাজিরার সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। ভাঙচুর করা হয় আসবাব। এরপর থেকে ইসরায়েলে সংবাদমাধ্যমটির সম্প্রচার ও কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
ওই সময়, সংবাদমাধ্যমটির কার্যক্রম সাময়িকভাবে ইসরায়েলে বন্ধে মন্ত্রিসভায় ভোট হয়। ভোটের প্রস্তাবে বলা হয়, বিদেশি সম্প্রচারমাধ্যম ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তায় হুমকির সৃষ্টি করেছে।
শুধু ইসরায়েল ভূখণ্ডে আলজাজিরার প্রবেশ ঠেকিয়েই ক্ষান্ত হয়নি তারা। গাজা ও অধিকৃত পশ্চিম তীরেও সংবাদ সংগ্রহে বাধার সৃষ্টি করে আসছে ইসরায়েলি বাহিনী। এবার ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞা আলজাজিরার সাংবাদিকদের আরও বিপদে ফেলবে।
মন্তব্য করুন