মার্কিন বিমানবাহী একটি রণতরীতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার দাবি করেছে ইয়েমেনের হুথি আনসারুল্লাহ সমর্থিত সশস্ত্র বাহিনী। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে ইয়েমেন সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইয়াহিয়া সারি বলেন, এই হামলায় ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের পাশাপাশি বহুসংখ্যক কামিকাজে ড্রোন ব্যবহার করা হয়।
জেনারেল সারি বলেন, ইয়েমেনের যোদ্ধারা মার্কিন নৌবাহিনীর ইউএসএস হ্যারি এস ট্রুম্যান বিমানবাহী রণতরীতে হামলা চালিয়েছে। মার্কিন বাহিনী ইয়েমেনের বিরুদ্ধে একটি বড় বিমান হামলা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল বলেও দাবি করেন তিনি।
ইয়েমেন সামরিক বাহিনীর এই মুখপাত্র আরও বলেন, এদিন একই সঙ্গে ইসরায়েলের বেন গুরিয়ন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লক্ষ্য করেও হামলা চালানো হয়েছে। ইয়েমেনি ক্ষেপণাস্ত্র ইউনিটগুলো এই হামলায় ফিলিস্তিন-২ হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে বলেও জানান তিনি।
এ ছাড়া, ইয়েমেনি বাহিনী জুলফিকার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে অধিকৃত আল কুদসের দক্ষিণে একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে হামলা চালায় বলে জানানো হয়েছে। জুলফিকার ক্ষেপণাস্ত্র রাডার ফাঁকি দিতে সক্ষম এবং উচ্চ মাত্রায় ম্যানুভার করতে পারে। এই ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা দুই হাজার কিলোমিটারেরও বেশি।
এদিকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলছে, তারা ইয়েমেন থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে আটকে দিয়েছে। ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ইসরায়েলের আকাশে প্রবেশের আগেই আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সেগুলোকে শনাক্ত করে এবং আকাশেই ধ্বংস করে।
তবে তেল আবিবজুড়ে সতর্কতা সাইরেন বেজে ওঠার কথা জানিয়েছে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম। এ বিষয়ে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী বলছে, ধ্বংস হওয়া ক্ষেপণাস্ত্রের টুকরো বাসিন্দাদের ওপর পড়ার ভয়ে সতর্কতা জারি করা হয়। এ সময় লোকজন নিরাপদ স্থানে সরে যান। একটি সামরিক বিবৃতিতে এ দাবি করেছে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বাহিনী।
ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা এর আগে বলেছিল, তারা ইসরায়েলের বেন গুরিয়ন বিমানবন্দর এবং অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমের দক্ষিণে একটি পাওয়ার স্টেশন লক্ষ্য করে দুটি সামরিক অভিযান চালিয়েছে। তবে তাতে কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা স্পষ্ট করে জানাতে পারেনি হুথি বাহিনী।
প্রসঙ্গত, ইয়েমেনের হামলায় দিশাহারা হয়ে পড়েছে ইসরায়েল। দেশটিতে একের পর এক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুথি। ২৬ ডিসেম্বরও আবারও ইসরায়েলে হামলা চালিয়েছে তারা। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী তখন জানিয়েছে, আকাশসীমায় প্রবেশের আগেই ক্ষেপণাস্ত্রটি ভূপাতিত করা হয়েছে।
এর আগে হুথিরা জানায়, সানা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, হোদেইদাহ বন্দর এবং তেলের অবকাঠামোসহ বিভিন্ন জায়গায় বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে অন্তত ছয়জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় দেশটিতে হামলা জোরদারের ঘোষণা দেয় তারা।
মন্তব্য করুন