ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা বর্তমানে একটি মানবিক বিপর্যয়ে পরিণত হয়েছে। সেখানে বসবাসরত মানুষরা প্রতিনিয়ত খাবারের জন্য কাঁদছে এবং এক টুকরো গরম খাবার তাদের কাছে এক ধরনের কল্পনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
জাতিসংঘের কর্মকর্তারা শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) এসব পরিস্থিতি তুলে ধরেন। খবর ইউনাইটেড নিউজ (ইউএন)।
বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) কর্মকর্তাদের মতে, উত্তর গাজায় ইসরায়েলি অবরোধ ও আগ্রাসনের ৭৫তম দিনে গাজার পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। সেখানে ঠান্ডা, বৃষ্টির মধ্যে এবং ইসরায়েলি হামলার অব্যাহত চাপের মধ্যে জীবনযাপন করা মানুষদের জন্য কোনো আশার আলো নেই।
জাতিসংঘের ত্রাণ সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএর প্রতিনিধি লুইস ওয়াটারিজ বলেন, গাজাবাসীর সঙ্গে কী ধরনের আচরণ করা হচ্ছে, তা পুরো বিশ্বকে দেখতে হবে। এই পরিস্থিতিতে কোনো মানুষই বাস করতে পারবে না।
তিনি বলেন, এখন গাজা একটি কবরস্থানে পরিণত হয়েছে, যেখানে দুই মিলিয়নেরও বেশি মানুষ আটকা পড়েছে। তারা আর পালিয়ে যেতে পারছে না, তাদের মৌলিক প্রয়োজনীয়তা পূরণের কোনো উপায় নেই।
ইউনিসেফের কর্মকর্তা রোজালিয়া বোলেনও এ বিষয়ে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, গাজায় ৯৬ শতাংশ নারী ও শিশু তাদের মৌলিক খাদ্য চাহিদা পূরণ করতে পারছে না। তিনি আরও জানান, গাজার উত্তরের অঞ্চলটি প্রায় ৭৫ দিন ধরে অবরুদ্ধ, ফলে এখানে মানবিক সাহায্য পৌঁছানো প্রায় অসম্ভব।
শিশুরা শীতে কাঁপছে, পায়ে জুতা নেই এবং খাবারের অভাবে তারা আবর্জনায় প্লাস্টিক খুঁজে পাচ্ছে, যা তারা পুড়িয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে। এসব পরিস্থিতি গাজার মানুষের জীবনকে চরম দুর্দশায় পরিণত করেছে।
ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি জাতিসংঘের একটি খাদ্য ও পানি সরবরাহের আবেদন নাকচ করে দিয়েছে। এর ফলে, গাজার বিভিন্ন অঞ্চলে থাকা মানুষরা তাদের বেঁচে থাকার জন্য খাদ্য এবং পানি থেকে চরমভাবে বঞ্চিত হচ্ছে।
জাতিসংঘের কর্মকর্তারা জানান, গাজার পরিস্থিতি এখন এমন এক অবস্থায় পৌঁছেছে, যেখানে বসবাসরত মানুষের কাছে জীবনযাপন মানে মৃত্যুর সাথে লড়াই করার সমান।
মন্তব্য করুন