নতুন যুগের সূচনা করেছে সিরিয়ার বিদ্রোহীরা। দেশটিতে দুই দশকের বেশি সময় ধরে ক্ষমতাসীন বাশার আল আসাদ সরকারের পতন হয়েছে। তার শাসনামলে সিরীয়দের বিরুদ্ধে যারা অপরাধ করেছে তাদের জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হবে বলে জানিয়েছে দেশটির অন্তর্বর্তী সরকার।
বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের মুখপাত্র ওবায়েদ আরনাউত এক সাক্ষাৎকারে বলেন, নতুন যুগের সূচনা করার জন্য নতুন সরকারের লক্ষ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো আইনের শাসন এবং দেশের বিচারব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা। এটি কেবল তখনই হবে যখন আসাদের কুখ্যাত কারাগারে লাখ লাখ সিরিয়ানকে আটক ও নির্যাতনকারীদের বিচারের আওতায় আনা হবে।
তিনি বলেন, আমরা অপরাধীদের জবাবদিহি করার মাধ্যমে সমাজের গভীর ক্ষতগুলো নিরাময় ও ন্যায়সঙ্গত ভবিষ্যতের পথ প্রশস্ত করার লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছি।
সরকারের শীর্ষ অগ্রাধিকারের মধ্যে রয়েছে দুর্নীতিতে কলঙ্কিত রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কার করা জানিয়ে আরনাউত বলেন, যেসব কর্মচারী অপরাধ করেছেন এবং সিরিয়ার জনগণের ক্ষতি করেছেন তাদের বরখাস্ত করা হবে এবং তাদের জবাবদিহি করা হবে। সরকার নিবেদিতপ্রাণ, পেশাদার এবং দেশের প্রতি অনুগতদের অগ্রাধিকার দেবে।
তিনি বলেন, চাকরির শূন্যপদ সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। দেশ গঠনের জন্য আমাদের একতাবদ্ধ হয়ে প্রচেষ্টা চালাতে হবে। নতুন রাষ্ট্র অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিকভাবে অবকাঠামো পুনর্নির্মাণ এবং অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার ওপর জোর দেবে।
বাবা হাফিজ আল বাশাদের মৃত্যুর পর ২০০০ সালে বাশার আল আসাদের শাসনকাল শুরু হয়। প্রথমে সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিলেও পরবর্তী সময়ে বাবার মতোই কর্তৃত্ববাদী শাসক হয়ে ওঠেন তিনি। বাশার আসাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও বিরোধীদের ওপর দমনপীড়নের। এর আগে ২০১১ সালে আরব বসন্ত ঘিরে বাশার আসাদের ক্ষমতার মসনদ নড়ে উঠেছিল।
কিন্তু সে যাত্রায় রাশিয়া ও ইরানের সমর্থনে ক্ষমতায় টিকে গিয়েছিলেন বাশার আসাদ। এবার অবশ্য শেষরক্ষা হয়নি। রাশিয়া ও ইরান আগেই তাদের সামরিক উপস্থিতি কমিয়ে ফেলে। এরপরই হায়াত তাহরির আল শামের নেতৃত্বে বিদ্রোহীদের গ্রুপ মাত্র ৩টি শহর দখল করে নেওয়ার পরই দেশ ছেড়ে পালাতে হয় বাশার আসাদকে। গোপনে প্লেনে চড়ে ছাড়তে হয় মাতৃভূমিও।
মন্তব্য করুন