সিরিয়ায় বাশার আল আসাদ সরকারের পতনে দেশটির সামরিক শক্তি চরম হোঁচট খাচ্ছে। বিদ্রোহীদের হাত ধরে জনগণ মুক্তির স্বাদ পাওয়ার পরই সিরিয়ার সামরিক অবকাঠামোর ওপর নির্বিচার হামলা শুরু করে সীমান্তবর্তী ইহুদিবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েল। ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছে সিরিয়ার সব ধরনের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। গণমাধ্যমে উঠে আসা বিভিন্ন ভিডিও ও স্থিরচিত্রে উঠে এসেছে হামলার ভয়াবহতা।
এরই মধ্যে সিরিয়ার গুরুত্বপূর্ণ সামরিক বিমানবন্দরগুলো ধ্বংস করেছে ইসরায়েল। এবার দেশটির নৌবাহিনীকেও ধ্বংস করে দিয়েছে তারা। সিরিয়ার প্রতিরক্ষা খাতকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করার লক্ষ্যমাত্রার অংশ হিসেবে এমন হামলা চালাচ্ছে নেতানিয়াহু প্রশাসন। গেল দুই দিনে সিরিয়ার বিভিন্ন অবকাঠামো লক্ষ্য করে সাড়ে তিনশ’র বেশি বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বিমানবাহিনী। একই সঙ্গে দখল করে নেওয়া হয়েছে সিরিয়ার গোলান মালভূমিও।
এক বিবৃতিতে ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্স বা আইডিএফ বলেছে, সোমবার রাতে আল-বাইদা ও লাতাকিয়া বন্দরে তারা হামলা করেছে, যেখানে সিরিয়ার নৌবাহিনীর ১৫টি জাহাজ নোঙ্গর করা ছিল। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎয বলেছেন, ‘ইসরায়েল রাষ্ট্রের প্রতি কৌশলগত যেসব হুমকি আছে সেগুলো ধ্বংসই তাদের লক্ষ্য’।
এর আগে, বিদ্রোহীদের বিজয়ের পর থেকে এখন পর্যন্ত সিরিয়ার বিভিন্ন সামরিক অবকাঠামো লক্ষ্য করে একশ’র বেশি হামলা বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বিমানবাহিনী। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সিরীয় পর্যবেক্ষক সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস তথা এসওএইচআর জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলার লক্ষ্যবস্তুতে দামেস্কের এমন একটি স্থাপনা রয়েছে যেটিকে ইরানি বিজ্ঞানীরা রকেট তৈরির জন্য ব্যবহার করেছেন বলে জানা গেছে।
সরকার পতনের পর এরই মধ্যে সিরিয়ার গুরুত্বপূর্ণ ৩টি বিমানবন্দর পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছে ইসরায়েল। এগুলো হলো- উত্তর সিরিয়ার কামিশহিলিতে একটি, হোমসে একটি এবং দামেস্কের মেজ্জেহ বিমানবন্দর। এ ছাড়া সামরিক সদরদপ্তর, গোলাবারুদ মজুদাগারসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সামরিক অবকাঠামোতে হামলা চালিয়েছে নেতানিয়াহুর বাহিনী।
শুধু তাই নয়, সিরিয়ার কয়েক ডজন হেলিকপ্টার ও যুদ্ধবিমানও ধ্বংস করে দিয়েছে ইসরায়েলি সেনারা। এ সময় আসাদ সরকারের হাতে থাকা রাসায়নিক অস্ত্র সংরক্ষণাগারেও হামলা চালানে হয়েছে বলে দাবি করেছে ইসরায়েলে। মূলত বিদ্রোহীদের হাতে এসব গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও সামরিক সরঞ্জাম যাওয়া ঠেকাতে এমন ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে বলে দাবি করে তেলআবিবের সেনারা।
মন্তব্য করুন