সিরিয়ায় প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের পতনের পর দেশটির সংকটকালীন সময়ে আধিপত্য বিস্তারের নতুন উদ্যোগ নিয়েছে ইসরায়েল।
রোববার (৮ ডিসেম্বর) ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) সিরিয়া-ইসরায়েল সীমান্তের গোলান মালভূমির ‘বাফার জোন’ দখলের পর সিরিয়ার অংশে থাকা হারমন পর্বতের নিয়ন্ত্রণ নেয়।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম জেরুজালেম পোস্টের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রসঙ্গক্রমে, ১৯৬৭ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের সময় সিরিয়ার গোলান মালভূমি দখল করে ইসরায়েল। ১৯৭৪ সালে দুই দেশের মধ্যে একটি নিয়ন্ত্রণ রেখা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যার মাধ্যমে ইসরায়েল এ অঞ্চলে সীমিত সামরিক কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল। কিন্তু সিরিয়ার বর্তমান অস্থিতিশীলতা এবং বাশার আল আসাদের ক্ষমতাচ্যুতি ইসরায়েলের জন্য নতুন কৌশলের পথ খুলে দিয়েছে।
এদিকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু রোববার ঘোষণা দেন, সিরিয়ার সঙ্গে ১৯৭৪ সালের চুক্তি আর কার্যকর নয়। তিনি বলেন, মন্ত্রিপরিষদের সমর্থন নিয়ে প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর সঙ্গে মিলে আমি আইডিএফকে বাফার জোন এবং এর কাছাকাছি কৌশলগত স্থানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি।
নেতানিয়াহুর বক্তব্য অনুযায়ী, এই পদক্ষেপের লক্ষ্য হলো শত্রুদের ইসরায়েলি সীমান্তের কাছাকাছি আসার সুযোগ বন্ধ করা।
হারমন পর্বতের কৌশলগত গুরুত্ব গোলান মালভূমির ‘বাফার জোন’ দখলের পর আইডিএফ দ্রুত সিরিয়া-লেবানন সীমান্তে অবস্থিত হারমন পর্বতের নিয়ন্ত্রণ নেয়। জেরুজালেম পোস্টের তথ্য অনুযায়ী, হারমন পর্বত এই অঞ্চলের সর্বোচ্চ স্থান হওয়ায় এটি সামরিক অবস্থানে কৌশলগত সুবিধা দেয়। এ কারণে ইসরায়েল বাফার জোনের পরপরই হারমন দখলে অগ্রসর হয়।
ইসরায়েলের মূল লক্ষ্য
বিশ্লেষকদের মতে, ইসরায়েলের এই পদক্ষেপের পেছনে রয়েছে দুটি মূল লক্ষ্য। প্রথমত, সিরিয়ার অস্থিতিশীল পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে কৌশলগত এলাকাগুলোর নিয়ন্ত্রণ নেওয়া। দ্বিতীয়ত, নিরাপত্তার অজুহাতে সিরিয়ার সীমান্তে ইসরায়েলি উপস্থিতি শক্তিশালী করা।
ইসরায়েলের এই কার্যক্রম নতুন করে সিরিয়া সংকটকে আন্তর্জাতিক আলোচনায় ফিরিয়ে এনেছে। এটি সিরিয়ার ভবিষ্যৎ ভূরাজনৈতিক অবস্থানকেও প্রভাবিত করতে পারে।
মন্তব্য করুন