সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত ঐতিহাসিক উমাইয়া মসজিদে বিদ্রোহী গোষ্ঠী ‘হায়াত তাহরির আল-শাম’ (এইচটিএস)-এর নেতা আবু মোহাম্মদ আল জোলানির দেখা মিলেছে। সেখানে তিনি সবার উদ্দেশে ভাষণ দেন।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন'র প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে আল-জোলানির বিজয়-বার্তা।
প্রতিবেদনে বলা হয়, রোববার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ সরকারের পতনের পর এই প্রথমবারের মতো উমাইয়া মসজিদের মিম্বারে দাঁড়িয়ে তিনি সিরিয়ার জনগণের উদ্দেশে বিজয়ের বার্তা দেন। বিজয়ী বার্তা শুধু সিরিয়ার জনগণের জন্য নয়, বরং আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও একটি গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত বহন করে।
আল-জোলানি তার বক্তব্যে প্রথমেই উল্লেখ করেন, সিরীয়দের দীর্ঘদিনের সংগ্রাম, আত্মত্যাগ এবং নির্যাতনের কথা।
তিনি বলেন, যারা দীর্ঘ সময় কারাবন্দি ছিলেন এবং অনেক কষ্ট সহ্য করেছেন, তাদের আত্মত্যাগের ফলস্বরূপ এই বিজয় এসেছে। তিনি সিরিয়ার জনগণের একতা এবং সংগ্রামকে প্রশংসা করেন, যা হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) যোদ্ধাদের মাধ্যমে আসাদ সরকারের পতনে ভূমিকা রেখেছে।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, আল-জোলানি তার বক্তব্যে সিরিয়ার ধর্মীয় ও সম্প্রদায়িক বিভাজন দূর করার জন্য একটি শান্তির বার্তা দিয়েছেন। সিরিয়ায় সুন্নি মুসলিমরা সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও, আসাদ ছিলেন শিয়া আলাওয়াত সম্প্রদায়ের। আল-জোলানি তার ভাষণে সকল ধর্মাবলম্বী সিরীয়দের একতাবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
জোলানি তার বক্তব্যে বলেন, আসাদের শাসন হাজারো নিরীহ নাগরিককে অন্যায়ভাবে কারাবন্দি করেছে। আজ আমরা এই বিজয়ের পুরস্কার পেয়েছি।
তিনি বলেন, আজ আমরা বিজয়ী, আসাদের শাসন শেষ। এটি শুধু আমাদের নয়, পুরো সিরিয়ার বিজয়।
এদিকে বিশ্লেষকরা বলছেন, বিদ্রোহী জোটের মধ্যে মতবিরোধ এবং আঞ্চলিক গোষ্ঠীগুলোর ক্ষমতার লড়াই নতুন শাসন কাঠামো গড়তে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।
কানাডার অটোয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যপ্রাচ্য বিশ্লেষক থমাস জুনো বলেন, আসাদ বিরোধিতাই ছিল এই বিদ্রোহী জোটের মিলনের মূল শক্তি। তবে আসাদ পালিয়ে যাওয়ার পর এই গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে ঐক্য ধরে রাখা একটি বড় চ্যালেঞ্জ হবে।
মন্তব্য করুন