২০২৪ সালটি মধ্যপ্রাচ্যে ইরান ও তার মিত্রদের জন্য একটি ভয়াবহ বছর হিসেবে ইতিহাসে চিহ্নিত হতে পারে। সিরিয়ার বিদ্রোহী জোটের হঠাৎ আক্রমণ ও বাশার আল–আসাদ সরকারের পতন এই অঞ্চলের শক্তি ভারসাম্যে বড় পরিবর্তন এনেছে।
বিদ্রোহী জোট, যার নেতৃত্বে রয়েছে আল-নুসরা ফ্রন্ট এবং হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস), সিরিয়ার গুরুত্বপূর্ণ শহর আলেপ্পোসহ আরও কিছু এলাকায় দখল নিয়েছে। সিরিয়ার সেনাবাহিনী ও ইরানি মিত্ররা প্রতিরোধ না করতে পেরে আত্মসমর্পণ করেছে বা পালিয়েছে। ফলে বিদ্রোহীরা সহজেই ট্যাংক ও অস্ত্রের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।
বিদ্রোহীদের সাফল্যের পেছনে ইসরায়েলের ভূমিকা?
সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ইরানের মিত্ররা দাবি করেছে, এই আক্রমণ ইসরায়েল ও তার মিত্রদের একটি সুপরিকল্পিত প্রকল্প। তাদের মতে, ফিলিস্তিনে হামাস ও লেবাননে হিজবুল্লাহকে দুর্বল করার পর ইসরায়েল এখন সিরিয়াকে লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছে।
অন্যদিকে, ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি বলেছেন, লেবানন ও ফিলিস্তিনে ব্যর্থ হয়ে আমেরিকা ও ইসরায়েল সিরিয়ার বিদ্রোহীদের ব্যবহার করে হামলার পরিকল্পনা করেছে।
তুরস্কের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন
সিরিয়ার অনুগত বিশ্লেষকদের একটি অংশ মনে করে, এই হামলার পেছনে তুরস্কের সমর্থন রয়েছে। যদিও তুরস্ক দাবি করেছে, এই হামলা সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত এবং এতে বেসামরিক লোকজন হুমকির মুখে পড়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যে শক্তির নতুন হিসেব
রাশিয়া সিরিয়ার বিদ্রোহী জোটের এ বিজয়কে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করছে। তবে এই ঘটনার প্রভাবে ইরান ও তার মিত্রদের প্রভাব মধ্যপ্রাচ্যে উল্লেখযোগ্যভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে।
এছাড়াও আসাদ সরকারের পতনে ইরান, রাশিয়া এবং তাদের মিত্রদের কৌশলগত পরিকল্পনায় বড় বাধা সৃষ্টি করেছে। সিরিয়ার এই নতুন পরিস্থিতি ইসরায়েলের মধ্যপ্রাচ্যে সামরিক ও রাজনৈতিক অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করার পথ তৈরি করেছে।
ইতিহাস হয়তো বলবে, ২০২৪ ছিল মধ্যপ্রাচ্যে ইরান ও তার মিত্রদের জন্য সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং বছর।
মন্তব্য করুন