মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। দেশটির এ হামলায় লেবানন ও গাজায় ৪৫ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। অঞ্চলজুড়ে গণহত্যার জন্য দায়ী করে দেশটিকে বর্ণবাদী রাষ্ট্র ঘোষণা দিয়েছে অক্সফোর্ড ইউনিয়ন।
সোমবার (০২ ডিসেম্বর) তুরস্কের সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ডের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ সংগঠনের অন্যতম হলো অক্সফোর্ড ইউনিয়ন। এ সংগঠনে গত বৃহস্পতিবার ইসরায়েলকে গণহত্যার জন্য দায়ী বর্ণবাদী রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করার পক্ষে ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে প্রস্তাবের পক্ষে ২৭৮ ভোট পড়েছে। অন্যদিকেএর বিপক্ষে মাত্র ৫৯ ভোট পড়েছে।
অক্সফোর্ড ইউনিয়ন বিতর্কের মাধ্যমে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরে। ১৮২৩ সালে প্রতিষ্ঠিত এ সংগঠন ইসরায়েলির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানার জারির পর এমন পদক্ষেপ নিয়েছে। ফলে তা নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
টিআরটি ওয়াল্ড জানিয়েছে, এই হাউস বিশ্বাস করে যে ইসরায়েল গণহত্যার জন্য দায়ী একটি বর্ণবাদী রাষ্ট্র শীর্ষক এ বিতর্ক শুরু করা হয়। এতে ফিলিস্তিনি আমেরিকান লেখক সুসান আবুলহাওয়া, ফিলিস্তিনি কবি মোহাম্মদ এল কুর্দ, এবং ইহুদিবাদী ইসরায়েলি লেখক মিকো পেলেডসহ বিশিষ্ট বক্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বিতর্কে বক্তারা প্রস্তাবের পক্ষে নিজেদের যুক্তি উপস্থাপন করেন। এ সময় বিরোধীদের মধ্যে যুক্তরাজ্যে ইসরায়েলি আইনি বিষয়ক পরিচালক নাতাশা হাউসডর্ফ এবং আরব-ইসরায়েলি কর্মী ইয়োসেফ হাদ্দাদসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
অক্সফোর্ড ইউনিয়নের এ বিতর্ক সরাসরি কোনো রাজনৈতিক প্রভাব ফেলে না। তবে এটি বিশ্বব্যাপী জনমত পরিবর্তনের বিশেষত অ্যাকাডেমিক পরিসরে দিকটি তুলে ধরে।
উল্লেখ্য, ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় এক বছর ধরে হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। দেশটির অব্যাহত এ হামলায় সৃষ্ট ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কার করতে অন্তত ১৫ বছর সময় লাগবে। এ জন্য প্রতিদিন ১০০টি লরি ব্যবহার করতে হবে।
জাতিসংঘের হিসাবমতে, গাজায় ভবন ধসে এ পর্যন্ত ৪২ মিলিয়ন টনেরও বেশি ধ্বংসস্তূপ জমা হয়েছে। এ ধ্বংসস্তূপগুলো যদি একসঙ্গে এক জায়গায় রাখা যায়, তাহলে তা মিশরের ১১টি গ্রেট পিরামিডের সমান হবে। এ ধ্বংসস্তূপ সরাতে ব্যয় হবে ৫০০ থেকে ৬০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৭ হাজার কোটি টাকার বেশি)।
ইউএন এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রামের হিসাব অনুসারে, গাজায় ১ লাখ ৩৭ হাজার ২৯৭টি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা অঞ্চলটির মোট ভবনের অর্ধেকের বেশি। ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের মধ্যে এক-চতুর্থাংশ পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। এ ছাড়া এক-দশমাংশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং এক-তৃতীয়াংশ বেশ খানিকটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব ভবনের ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে ফেলার জন্য ২৫০ থেকে ৫০০ হেক্টর জমির প্রয়োজন পড়বে
মন্তব্য করুন