মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের শক্তিশালী অবস্থানকে দুর্বল করতে নতুন কৌশলে হাঁটছে ইসরায়েল। অঞ্চলে ইরানের অন্যতম মিত্র বাশার আল-আসাদের নিয়ন্ত্রণাধীন সিরিয়াকে নতুন করে অস্থিতিশীল করে তুলতে চাইছেন নেতানিয়াহু। এ লক্ষ্যে পরম মিত্র যুক্তরাষ্ট্রকে সঙ্গে নিয়ে এবার সিরিয়ার বিদ্রোহীদের উসকে দিচ্ছে তেলআবিব। তবে উল্টো তারা এর দায় চাপাতে চাইছে মস্কোর ওপর।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তা রিচার্ড গ্রেনাল অভিযোগ করেছেন, সিরিয়া বিশেষ করে বাশার আল-আসাদকে নিয়ে নতুন ষড়যন্ত্রে মেতেছেন পুতিন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে গ্রেনেল লিখেন, আসাদকে উৎখাতে বিদ্রোহীদের কার্যত বাধা দিচ্ছে না রাশিয়া। খুবই বড় ঘটনা। এখন দাবা খেলার সময়।
সাবেক এই গোয়েন্দা কর্মকর্তা ট্রাম্পের প্রথম দফার প্রশাসনে ন্যাশনাল ইন্টিলিজেন্সের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, ট্রাম্পের দ্বিতীয় প্রশাসনেও জায়গা পেতে পারেন গ্রেনেল। আনুষ্ঠানিক কোনো নিয়োগ পাওয়ার আগেই পুতিনকে নিয়ে গুরুতর অভিযোগ করে হইচই ফেলে দিয়েছেন তিনি। তার অভিযোগের পর প্রশ্ন উঠছে- আসলে কি চাইছেন পুতিন?
মূলত, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমি পুতিনের প্রত্যক্ষ মদদেই এতদিন ধরে সিরিয়ার ক্ষমতায় রয়েছেন বাশার আল আসাদ। গ্রেনেলের এমন অভিযোগের পর তার এবং রাশিয়া ও সিরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে নিউজউইক। তবে রাশিয়া বা সিরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
গেল ২৭ নভেম্বর সিরিয়ায় নতুন করে বড় ধরনের হামলা চালায় বিদ্রোহীরা। এরপর দ্রুতগতিতে উত্তরাঞ্চলীয় সিরিয়ার বড় অংশ নিজেদের দখলে নেয়। বিশেষ করে সিরিয়ার দ্বিতীয় বৃহ্ত্তম শহর আলেপ্পো এখন কার্যত বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে। ২০১৫ সালে বাশার আল আসাদের সমর্থনে সিরিয়ার সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। দেশটিতে এখনও হাজার হাজার রুশ সেনা রয়েছে। তবে বিদ্রোহীদের গতির কাছে হার মানে বিমান বাহিনী।
২০১৬ সালে রাশিয়া ও ইরানের মদদ নিয়ে আলেপ্পো শহর পুনর্দখল করে আসাদ বাহিনী। এর আগে কয়েক বছর তুমুল লড়াই হয় বিদ্রোহীদের সঙ্গে। তবে এবারের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। হায়াত তাহরির আল-শামের সঙ্গে জোট বেঁধেছে আসাদবিরোধী কয়েকটি গ্রুপ। এই জোটে থাকা কয়েকটি গ্রুপের সঙ্গে আল-কায়দার সম্পৃক্ততা রয়েছে।
এরই মধ্যে সোশ্যালে খবর ছড়িয়েছে বিদ্রোহীদের হাতে নিহত হয়েছে রাশিয়ার বিশেষ বাহিনীর কয়েকজন সদস্য। তবে এ তথ্য স্বাধীনভাবে নিশ্চিত করা যায়নি। তবে রুশ বাহিনীর উপস্থিতি থাকার পরও বিদ্রোহীরা যেভাবে সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলের শহরগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিচ্ছে, তাতে পশ্চিমা গোয়েন্দারা ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছেন। তবে রুশ বাহিনী এরই মধ্যে বিদ্রোহীদের ওপর বিমান চালিয়েছে বলেও খবর বেরিয়েছে।
মন্তব্য করুন