সিরিয়ায় বিদ্রোহীদের কাছে দিশেহারা হয়ে পড়েছে দেশটির সেনাবাহিনী। গত কয়েকদিন ধরে বিদ্রোহীদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর সংঘর্ষ চলছে। এতে সেনাসহ দুই শতাধিক লোক নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া সিরিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর আলেপ্পো দখলে নেওয়ার দাবি করেছে বিদ্রোহীরা।
শনিবার (৩০ নভেম্বর) বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
মার্কিন পর্যবেক্ষক সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস (এসওএইচআর) জানিয়েছে, বিদ্রোহীরা দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর আলেপ্পোর বেশিরভাগ অংশ দখলে নিয়েছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, শুক্রবার সন্ধ্যায় বিদ্রোহীরা শহরের অর্ধেকেরও বেশি এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত কয়েক বছরের মধ্যে সিরিয়ার সরকারে বিরুদ্ধে বিদ্রোহীদের এটি সবচেয়ে বড় তাণ্ডব। ২০১৬ সালে দেশটির সেনাবাহিনী প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে জোরপূর্বক ক্ষমতাচ্যুত করে। এরপর প্রথমবারের মতো বিদ্রোহীরা আলেপ্পোতে পৌঁছেছে।
সিরিয়ার বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) সংশ্লিষ্ট একটি চ্যানেলে এ সংক্রান্ত ভিডিও পোস্ট করা হয়েছে। এতে শহরের ভেতরে গাড়িতে বিদ্রোহীদের দেখা গেছে। বিবিসির পক্ষ থেকে এসব ভিডিওর জিওলোকেশন যাচাই করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, এটি সিরিয়ার আলেপ্পোর পশ্চিমাঞ্চলের একটি এলাকা।
সরকারি বাহিনী জানিয়েছে, তারা আলেপ্পো এবং ইদলিব প্রদেশের বেশ কয়েকটি শহর পুনরুদ্ধার করেছে। বুধবার বিদ্রোহী গোষ্ঠী এইচটিএস এবং মিত্র দলগুলো এসব এলাকায় আক্রমণ চালিয়ে দখল নেয়।
২০১১ সাল থেকে দেশটিতে গণতন্ত্রপন্থি বিক্ষোভ চলছে। এ বিক্ষোভ দমনের পর দেশটিতে গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতির তৈরি হয়। এতে অর্ধমিলিয়ন মানুষ নিহত হন। এ সময় প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের বিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠী বিস্তীর্ণ অঞ্চল দখল করতে অশান্তির সুযোগ নেয়। পরে রাশিয়া এবং অন্যান্য মিত্রদের সহায়তায় সরকার বেশিরভাগ এলাকা পুনরুদ্ধার করে।
একটি সামরিক সূত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছে, আলেপ্পো থেকে সমস্ত ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। এছাড়া বিমানবন্দর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
পর্যবেক্ষক সংস্থা জানিয়েছে, শুক্রবার আলেপ্পোতে সিরিয়া এবং রাশিয়ার বিমান অন্তত ২৩টি হামলা চালিয়েছে। এতে অন্তত ২৫৫ জন নিহত হয়েছেন। যা সিরিয়ায় বিদ্রোহী এবং সরকারপন্থিদের মধ্যকার সংঘর্ষে সবচেয়ে মারাত্মক ঘটনা।
মন্তব্য করুন