ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি সেনাদের বিমান হামলা আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে। গত দুদিনে এই ভয়াবহ হামলায় কমপক্ষে ১২০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এই হামলার ফলে মানবিক দুর্ভোগ অব্যাহত রয়েছে এবং অঞ্চলটির পরিস্থিতি আরও সংকটাপন্ন হয়ে উঠেছে।
শনিবার (২৩ নভেম্বর) ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের বরাতে আলজাজিরা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানান, গাজা শহরের জেইতুন শহরতলির একটি আবাসিক ভবনে শনিবার ইসরায়েলের বোমাবর্ষণে সাতজন নিহত হয়েছেন। একই দিন, গাজার দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় হামলা চালানো হয়, যার ফলে আরো কয়েকজন প্রাণ হারিয়েছেন।
এ ছাড়া ইসরায়েলি বিমান হামলা এবং স্থল আক্রমণের ফলে মধ্য গাজার নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরের আল-ফারুক মসজিদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এই মসজিদটি গাজার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় স্থান হিসেবে পরিচিত এবং এর ক্ষতির ফলে স্থানীয় জনগণের জন্য আরেকটি শোকের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এদিকে ইসরায়েলি সেনারা আক্রমণ আরও জোরদার করেছে এবং উত্তর গাজার বিভিন্ন এলাকায় বোমাবর্ষণ অব্যাহত রেখেছে। এমনকি, একটি হাসপাতালের আংশিক অংশেও হামলা চালানো হয়, যেখানে বহু শ্রমিক আহত হয়েছেন।
কামাল আদওয়ান হাসপাতালের পরিচালক হুসাম আবু সাফিয়া এক বিবৃতিতে জানান, ইসরায়েলি বাহিনী হাসপাতালের জরুরি বিভাগের প্রবেশদ্বার, আঙিনা, বৈদ্যুতিক জেনারেটর এবং হাসপাতালের গেটগুলোকে কয়েকবার লক্ষ্যবস্তু করেছে। এ হামলায় ১২ জন চিকিৎসক, নার্স এবং প্রশাসনিক কর্মী আহত হয়েছেন।
বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক মহল এ সহিংসতার তীব্রতা এবং এর ফলে মানুষের মধ্যে সৃষ্ট বিপর্যয়ের প্রতি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। গাজার জনগণের জন্য জরুরি মানবিক সহায়তা পৌঁছানো অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে, কিন্তু অব্যাহত বোমাবর্ষণ এবং আক্রমণ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।
গাজার মানুষদের কাছে শান্তি, নিরাপত্তা এবং সহানুভূতির প্রতীক হয়ে দাঁড়ানোর প্রয়োজনীয়তা আরও তীব্র হয়ে উঠেছে। আন্তর্জাতিক সমাজকে তাদের দায়বদ্ধতা এবং মানবিক চাহিদাগুলি পূরণের জন্য একত্রিত হতে হবে। বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপত্তা ও অধিকার রক্ষা করা এখন একান্ত জরুরি এবং এই সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানই মানবতার জন্য একটি অবিচ্ছেদ্য দায়িত্ব।
মন্তব্য করুন