ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর উত্তরাঞ্চলীয় সিজারিয়া এলাকায় অবস্থিত ব্যক্তিগত বাসভবনে দুটি ফ্ল্যাশ বোমা নিক্ষেপ করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, নেতানিয়াহুর বাড়ির বাগানে পড়ে দুটি ফ্ল্যাশ বোমা। হামলার পর ওই বাসভবনে আগুন ধরে যায়, তবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। হামলার সময় নেতানিয়াহু ও তার পরিবার বাসভবনে ছিলেন না। খবর রয়টার্স।
শনিবার (১৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় সিজারিয়া এলাকায় নেতানিয়াহুর ব্যক্তিগত বাসভবনে বোমা নিক্ষেপ করা হয়।
ইসরায়েলি পুলিশের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানায়, হামলার ঘটনা ইসরায়েলের নিরাপত্তা বাহিনী শিন বেত ও পুলিশ একযোগে তদন্ত করছে।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন এবং বিষয়টি অত্যন্ত গুরুতর বলে উল্লেখ করেছেন।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী মন্ত্রী এ হামলার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ইরান এবং তার ছায়াসংগঠনের কাছ থেকে হত্যার হুমকি পেয়েও প্রধানমন্ত্রীকে তার নিজের বাসভবনেও একই ধরনের হুমকি সইতে হবে, এটা সম্ভব নয়। তিনি নিরাপত্তা এবং বিচার সংস্থাগুলোকে অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।
নেতানিয়াহুর বাসভবনে এই হামলার ঘটনা ‘সব সীমা লঙ্ঘন’ হিসেবে আখ্যায়িত করে, অপর এক মন্ত্রী ইতামার বেন-গভির বলেন, প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে উসকানি এখন সব সীমা ছাড়িয়ে গেছে। তার বাসায় ফ্ল্যাশ বোমা নিক্ষেপ করা আরও একটি লাল রেখা পার করার সমান।
এ হামলার ঘটনায় দেশটির রাজনৈতিক মহলে নিন্দার ঝড় উঠেছে। বিরোধীদলীয় নেতা ইয়ার ল্যাপিড এবং জাতীয় ঐক্যের চেয়ারম্যান বেনি গ্যান্টজ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজোগও এ হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন এবং দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন।
এদিকে বোমা নিক্ষেপের পর এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষ হামলার দায় স্বীকার করেনি। তবে, ইসরায়েলের উত্তর সীমান্তে অক্টোবর ২০২৩ থেকে লেবাননের হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর সঙ্গে দেশটির বাহিনীর মাঝে গোলাগুলি চলে আসছে। এই হামলার সাথে কোনো আঞ্চলিক উত্তেজনার সম্পর্ক আছে বলে কোনো প্রমাণ মেলেনি এখনও পর্যন্ত।
উল্লেখ্য, এটিই প্রথম নিরাপত্তা লঙ্ঘন নয়। এর আগে নেতানিয়াহুর একই বাসভবন লক্ষ্য করে ২১ অক্টোবরে লেবাননের হিজবুল্লাহ ড্রোন হামলা চালায়। সেই হামলার দায় স্বীকার করেছিল এবং নেতানিয়াহুকে হত্যার হুমকি দিয়েছিল ইরান সমর্থিত গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। এসব ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর নিরাপত্তা নিয়ে বাড়তি উদ্বেগ তৈরি করেছে, বিশেষ করে চলমান আঞ্চলিক ও অভ্যন্তরীণ উত্তেজনার মধ্যে।
এই ঘটনা প্রধানমন্ত্রী এবং তার পরিবারের নিরাপত্তা আরও জোরদার করার জন্য নতুন পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান সৃষ্টি করেছে।
মন্তব্য করুন