মার্কিন হামলায় নিহত ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর কমান্ডার জেনারেল কাসেম সোলাইমানির হত্যার বিচার নিয়ে নতুন হুংকার দিয়েছে ইরান। আইনি ও বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তার হত্যার বিচার নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছে দেশটি।
শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) ইরানের সংবাদমাধ্যম প্রেস টিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সন্ত্রাসবিরোধী শীর্ষ কমান্ডার কাসেম সোলাইমানির হত্যার বিষয়ে আইনি ও বিচারিক পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে ইরান। তিনি মার্কিন বিমান হামলায় নিহত হয়েছিলেন।
শুক্রবার জাতিসংঘে ইরানের স্থায়ী মিশন জানিয়েছে, ইরান কয়েক বছর ধরে ঘোষণা করেছে যে তারা জেনারেল সোলাইমানি হত্যা মামলা আইনি ও বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে চালিয়ে যাচ্ছে। শুক্রবার ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ইরানি মিশন এ ঘোষণা দিয়েছে।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রত্যক্ষ নির্দেশে ২০২০ সালের ৩ জানুয়ারি বাগদাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বাইরে কাসেম সোলাইমানিকে ড্রোন হামলা করে হত্যা করা হয়। তিনি ইরানের কুদস ফোর্সের কমান্ডার ছিলেন।
মার্কিন গোয়েন্দাদের তথ্যমতে, গত ৫ নভেম্বরের নির্বাচনের আগে কাসেম সোলাইমানির হত্যার জবারে ট্রাম্পকে হত্যার ছক কষছিল ইরান। দেশটির নির্বাচনে আবার জয়ের মাধ্যমে মার্কিন মসনদে বসতে চলেছেন তিনি।
ট্রাম্পকে হত্যার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার অভিযোগে মার্কিন বিচার বিভাগে অন্তত দুজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা চলছে। আদালতের তথ্যানুসারে, তাদের মধ্যে ফরহাদ শাকেরি নামের এক ব্যক্তি রয়েছেন। তিনি ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর জন্য কাজ করে আসছিলেন। তদন্ত কর্মকর্তাদের কাজে তিনি স্বীকার করেছেন যে তিনি সেপ্টেম্বরে ট্রাম্পকে পর্যবেক্ষণ করছিলেন এবং হত্যার দায়িত্ব ছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের এমন অভিযোগ অস্বীকার ও তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাখ্যান করেছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি। এমন অভিযোগকে তিনি তৃতীয় শ্রেণির কমেডি বলেও অভিহিত করেছেন।
এদিকে সূত্রের বরাতে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত মাসে বাইডেন প্রশাসনকে লিখিত আশ্বাস দিয়েছে ইরান। অঞ্চলটিতে ক্রমবর্ধমান অস্থিতিশীলতার মধ্যে তেহরান ও ওয়াশিংটনের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে গোপনে এ চুক্তি করা হয়েছে।
কাসেম সোলাইমানি ইরানের ইসলামি বিপ্লবী রক্ষীবাহিনীর মেজর জেনারেল ছিলেন। ১৯৯৮ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত তিনি কুদস বাহিনীর বহির্দেশীয় সামরিক ও গোয়েন্দা কার্যক্রমের একজন কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তাকে অনেকে দেশটির ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খোমেনির ডানহাত ও ইরানের দ্বিতীয় ক্ষমতাধর ব্যক্তি হিসেবে জানতেন।
সোলেইমানি ২০২০ সালের ৩ জানুয়ারি ইরাকের বাগদাদে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিমান হামলায় নিহত হন। তার সাথে ফোর্সের আরও কয়েকজন সামরিক সদস্য নিহত হয়েছিলেন।
মন্তব্য করুন