মৃত্যুদণ্ড নিয়ে বিচিত্র এক নজির স্থাপন করেছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইরান। দেশটিতে এক যুবকের দ্বিতীয়বার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।
বুধবার (১৩ নভেম্বর) ভয়েস অব আমেরিকার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এনজিও জানিয়েছে, বুধবার দ্বিতীয়বারের মতো ২৬ বছর বয়সী এক ব্যক্তির ফাঁসি কার্যকর করেছে ইরান। কয়েক মাস আগে তার ফাঁসি কার্যকরের আধা মিনিটের মধ্যে স্থগিত করা হয়েছিল।
নরওয়েভিত্তিক ইরান হিউম্যান রাইটস (আইএইচআর) একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, আহমেদ আলিজাদেহ নামের ওই যুবককে ২০১৮ সালের অক্টোবরে হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তবে তিনি এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছিলেন। এ অভিযোগেই তার মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।
আইএইচআর জানিয়েছে, তেহরানের বাইরে কারাজের গেজেল হেসার কারাগারে গত ২৭ এপ্রিল তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছিল। তবে মাত্র ২৮ সেকেন্ডের মাথায় সেদিন তাকে ফাঁসির মঞ্চ থেকে নামিয়ে আনা হয়। এ সময় ভিকটিমের পরিবার হঠাৎ ক্ষমার অনুরোধ জানায়। পরে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের প্রক্রিয়া বাতিল করা হয়।
ইরানের শরিয়া আইন অনুসারে ভুক্তভোগীর পরিবার অপরাধীর জীবন বাঁচানোর জন্য ‘দিয়ত’ বা ব্লাড মানি বা মুক্তিপণ চাইতে পারে। এমনকি তারা ক্ষমা করার সিদ্ধান্ত নিতে পারে। তবে অনেক ক্ষেত্রে বিচারাধীন ব্যক্তির পরিবার নির্ধারিত অর্থ বহন করতে পারে না। এজন্য অনেকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
আইএইচআর জানিয়েছে, ব্লাড মানির জন্য ভিকটিমের পরিবারের সঙ্গে কোনো চুক্তি না হওয়ায় আলিজাদেহ মৃত্যুদণ্ডের হুমকিতে ছিলেন। বুধবার সকালে ঘেজেল হেসার কারাগারে তাকে আবার মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
মৃত্যুদণ্ডের নিন্দা জানিয়ে আইএইচআরে পরিচালক মাহমুদ আমিরি মোগহাদাম বলেন, আহমেদ আলিজাদেহ এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন। এ ছাড়া তিনি নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন।
আইএইচআর আরও জানিয়েছে, ২০২৪ সালে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ক্ষেত্রে একটি নতুন উত্থান দেখা যাচ্ছে। দেশটিতে অক্টোবরে অন্তত ১৬৬ জনের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ২০০৭ সালের পর এটি এক মাসে সর্বোচ্চ মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ঘটনা।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ অধিকারকর্মীরা বলছেন, চীন ছাড়া অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় ইরান বার্ষিক সবচেয়ে বার্ষিক বেশি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে। এমনকি দেশটিতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সঠিক কোনো পরিসংখ্যান পাওয়া যায় না।
মন্তব্য করুন